স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে দেহ ব্যবসায় নামানোর অপরাধে এক মহিলাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেন বিচারক। শুক্রবার নবদ্বীপের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুধীর কুমার এই সাজা ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত মাধবী বর্মন কোচবিহারের বাসিন্দা। তিনি জেল হেফাজতে ছিলেন।
সরকারি কৌঁসুলি সনৎ রায় জানান, ২০১১-র ২১ অগস্ট নদিয়ার মাজদিয়া পানশিলা গ্রাম পঞ্চায়েতের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যাওয়ার পথে অপহৃত হয়। পরিবারের তরফে নবদ্বীপ থানায় নিখোঁজ-ডায়েরি করা হয়। কিন্তু পুলিশ হদিস পায়নি ওই কিশোরীর। প্রায় আট মাস পরে ওই ছাত্রী একটি মোবাইল জোগাড় করে, তার দাদার মোবাইলে ফোন করে জানায়, যে তাকে কোচবিহারের এক যৌনপল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছে। সেই ফোনের সূত্র ধরে তদন্তে নামে পুলিশ।
২০১২-র ১৬ জুন কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার প্রিয়গঞ্জের এক যৌনপল্লি থেকে পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে। ধরা হয় স্থানীয় বাসিন্দা মাধবীকে। তাঁর বিরুদ্ধে নাবালিকাকে যৌন সংসর্গে বাধ্য করা এবং নারী পাচারের অভিযোগে একাধিক মামলা রুজু করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরীর বাবা পেশায় দিনমজুর। ঘটনার দিন সকাল ১০টা নাগাদ ওই কিশোরী বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গৃহশিক্ষকের বাড়ি পড়তে যাচ্ছিল। পথে এক অপরিচিত মহিলা ওই ছাত্রীর সঙ্গে আলাপ জমান। কথার ফাঁকে ওই মহিলা ছাত্রীটিকে একটি বিস্কুট খেতে দেন। বিস্কুটটি খাওয়ার পরেই ছাত্রীটি সংজ্ঞা হারায়। জ্ঞান ফেরার পরে সে জানতে পারে, তাঁকে যৌনপল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রায় আট মাস পর সে বাড়িতে ফোন করে গোটা ঘটনা জানায়।
ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মাধবী বর্মনকে ধরা হয়।
নবদ্বীপ থানার পুলিশ জানায়, মেয়েটি শুধু কোচবিহারে আছে বললেও নির্দিষ্ট করে ঠিকানা দিতে পারেনি। তবে যে মোবাইল থেকে ফোন করেছিল, সেই ফোনের সূত্রে ধরেই পুলিশ এগিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রিয়গঞ্জের ওই যৌনপল্লি থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়।