সভামঞ্চে অধীর-সোমেন-অভিজিৎ। —নিজস্ব চিত্র।
রাজনৈতিক বিদ্বেষের কারণে কংগ্রেস পরিচালিত মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদকে তৃণমূল সরকার প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত করছে। সোমবার বহরমপুরের এফইউসি ময়দানের দলীয় সভায় এমনটাই অভিযোগ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। ওই অভিযোগে সভাস্থল থেকে মুশির্দাবাদের জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিতে যান কংগ্রেস পরিচালিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদারের নেতৃত্বে জেলা কংগ্রেসের ১৩ জন বিধায়কের ১১ জন। সোমেন বলেন, “খবর রটেছে জেলার এক দল বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাচ্ছে। কিন্তু কোথায়? দেখছি সব বিধায়কই এখানে আছেন। তবে যাচ্ছেটা কে?” নাম না করে প্রাক্তন সাংসদ মান্নান হোসেনকে কটাক্ষ করে অধীর বলেন, “কোনও এমএলএ যাচ্ছে না। দলে কোনও ‘মেরে লে’ থাকলে তৃণমূলে যাবে।”
উল্লেখ্য ২০ সেপ্টেম্বর ওই এফইউসি মাঠেই রয়েছে তৃণমূলের সমাবেশ। খবর সে দিন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেবেন মুর্শিদাবাদের দু’ বারে সাংসদ মান্নান হোসেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় ও মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ওই সভায় থাকবেন জানিয়ে মান্নান হোসেন বলেন, “আমার সঙ্গে কোনও বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাবে, এমন কথা আমি কখনও বলিনি। কংগ্রেসে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি না। তাই তৃণমূলে চলে যাচ্ছি। কংগ্রেসে থাকলে চুপচাপ বসে থাকতে হবে। কিন্তু রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসাবে চুপচাপ বসে থাকা যায় না। তাই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” নওদার বিধায়ক আবু তাহের খান অবশ্য বলেন, “এবার লোকসভা ভোটে হেরে যাওয়ায় তিনি ফের জেতার আশায় তৃণমূলে যাচ্ছেন।”
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা, ১০০ দিনের কাজ, সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন, বার্ধক্য ও বিধবা ভাতা, আর্সেনিক দূষণমুক্ত পানীয় জল-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদকে দীর্ঘ দিন রাজ্য সরকার বঞ্চিত করছে। এ কথা জানিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, “বাম আমলে মুর্শিদাবাদ জেলা উন্নয়নের প্রশ্নে বঞ্চিত হয়েছে। তৃণমূল সরকারও তাই করছে। তার প্রতিবাদে নবান্ন ঘেরাও করা হবে।” সোমেন মিত্র বলেন, “মমতা তো বিন তুঘলক নন, তিনি প্রতিহিংসা পরায়ন চেঙ্গিস খা।ঁ তাই মুর্শিদাবাদের সঙ্গে এমন করছেন।” কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে মুর্শিদাবাদ জেলার বঞ্চনার বিষয়ে জঙ্গিপুরের সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আসন্ন লোকসভা অধিবেশনে বলব, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করা হলে সেই জেলাকে কেন্দ্র যেন সরাসরি অর্থ বরাদ্দ করে।”