ধৃত ছাত্রনেতার মুক্তির দাবিতে সোমবার শান্তিপুর কলেজে তালা ঝোলাল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একাংশ সমর্থক। শান্তিপুর কলেজে সংগঠনের ইউনিট সভাপতি হাসিবুল শেখের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিল তারা। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চয়ন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সম্প্রতি একটি গণ্ডগোলের ঘটনায় দুই ছাত্র নেতা গ্রেফতার হলেও একজন জামিন পেয়েছে। আর এক জনের জামিন হয়নি। তারই প্রতিবাদে কলেজ বন্ধ করে দিয়ে কিছু ছাত্র-ছাত্রী বিক্ষোভ দেখিয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিপুর কলেজে কার কর্তৃত্ব থাকবে তা নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দু’টি গোষ্ঠী হাসিবুল শেখ ও মনোজ সরকারের অনুগামীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে অনেক দিন। প্রায় দিনই কলেজ চত্বরে নিজেদের মধ্যে বোমাবাজি হয়। এরই মধ্যে মনোজ সরকার ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বচিত হন। হাসিবুল শেখ ছাত্র সংসদে কোনও পদ না পাওয়ায় বিরোধ চরম আকার নেয়। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের দিনে মনোজ সরকার ও তাঁর অনুগামীদের মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে হাসিবুল শেখের বিরুদ্ধে। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে শহরের বিভিন্ন এলাকায় গণ্ডগোল ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে। মনোজ সরকারের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও গুলি চালানো এবং হাসিবুল শেখের বিরুদ্ধে গুলি চালিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ছিল। গ্রেফতারের সাত দিন পরে জামিন পান মনোজ সরকার। হাসিবুল শেখ জামিন না পাওয়ায় জেলে থাকা অবস্থাতেই তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেন। ছাত্রসংসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক টিএমসিপি-র ফিরোজ আলি শেখের অভিযোগ, ‘‘হাসিবুল শেখের যাতে জামিন না হয়, তার চক্রান্ত করছে পুলিশ। এই চক্রান্তের সঙ্গে যুক্ত আমাদেরই সংগঠনের নেতৃত্বের একাংশ। হাসিবুলের জামিনে মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কলেজে ছাত্র ধর্মঘট চালিয়ে যাব।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নদিয়া জেলা সভাপতি অয়ন দত্ত বলেন, ‘‘হাসিবুল শেখ যাতে জামিন পায় তার জন্য আমরা সাংগঠনিক ভাবে চেষ্টা করছি। কিন্তু অনির্দিষ্ট কালের জন্য এই ছাত্র ধর্মঘটের আমাদের অনুমোদন নেই। এটা সম্পূর্ণ ভাবে ওই কলেজের ছেলে-মেয়েদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।” রানাঘাটের এসডিপিও আজহর এ তৌসিফ বলেন, ‘‘কে জামিন পাবে আর কে পাবে না সেটা আমাদের বিষয় নয়। সেটা পুরোপুরি আদালতের বিষয়। তাই এই নিয়ে মন্তব্য করা উচিত নয়।’’