রাজবাড়ির রাসে আট রকমের ভোগ!
ভোর থেকে শুরু। পালা ক্রমে যার শেষ গভীর রাতে। শুধু রাসের সময় নয় সারা বছরই রাধাকৃষ্ণকে নিবেদন করে দেওয়া হয় আট রকমের ভোগ। যা কান্দির রাজবাড়ির রাস উত্সবকে এক অন্য মাত্রা দিয়েছে।
সালটা ছিল ১৬৬৫। কান্দির রাজা গৌরাঙ্গ গোবিন্দ সিংহ কান্দি রাজবাড়িতে রাধাবল্লভ মন্দির প্রতিষ্ঠা ও রাস উত্সবের সূচনা করেন। সেই থেকে কান্দির রাজবাড়িতে রাস উত্সব পালিত হয়ে আসছে। তবে রাজবাড়ির রাস হিসাবে প্রচার পেলেও ওই রাস কান্দির বাসিন্দাদের উত্সব বলে পরিগণিত হয়েছে।
উদ্যোক্তারা জানালেন, ভোর ৪টে থেকে চলে ভোগ দেওয়ার পালা। মিঠাই ভোগ দিয়ে শুরু। সকাল ৮টায় ভেজা ছোলা ও মুগ দিয়ে বাল্যভোগ। ঠিক নয়টার সময় দুধ ও ছানার ভোগ। গাওয়া ঘিয়ে ভাজা লুচি, পাঁচ রকমের ফল ও মিষ্টি সাজিয়ে বেলা দশটায় দেওয়া হয় ফলারভোগ। বেলা বারোটায় অন্নভোগে থাকে কামিনীভোগ আতব চালের ভাত, পাঁচ রকমের ভাজা, দু’রকমের তরকারি, চাটনি ও পায়েস। সন্ধ্যাভোগে থাকে লুচি, ফল ও মিষ্টি। সন্ধায় সাতটার সময় সন্ধ্যারতির সময় ফের মিঠাইভোগ দেওয়া হয়। রাতেরভোগে থাকে ক্ষীর,চিড়া। তবে শুধ রাসের সময় নয় সারা বছরই ওই আট রকম ভোগের আয়োজন করা হয় বসে জানালেন মন্দিরের প্রধান সেবায়েত প্রশান্ত অধিকারী।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুজো উদ্যোক্তারা জানান, পূর্ণিমার রাতে শুরু হবে আতসবাজির উত্সব। আতশবাজির রোশনাইয়েই রাসমঞ্চের উন্মোচন হবে। এটাই ঐতিহ্য। আটদিন ধরে কীর্তনগানের আসর বসবে। বাউল গানেরও অয়োজন করা হয়েছে। টানা ১৫ দিন ধরে চলবে মেলা। সেই উপলক্ষে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতি। মন্দিরের কর্মী, স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই রাস উত্সব শুধু কান্দি নয়। আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও রাজবাড়িতে রাস উত্সবে যোগ দেন। প্রশান্তবাবু বলেন, “রাজবাড়ির পুজো হলেও উত্সবে স্থানীয় বাসিন্দারা স্বতস্ফূর্তভাবে যোগ দেন।”