অন্যত্র বিয়ে করেছেন প্রেমিকা। সেই রাগে প্রেমিকার সঙ্গে নিজের অন্তরঙ্গ কিছু মুহূর্তের ‘ভিডিও ফুটেজ’ ইউটিউবে দিয়ে দেন প্রেমিক। আর তার পর তা ছড়িয়ে পড়ে। মেয়েটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার রাতে অভিযুক্ত হাসান সরকারকে মুর্শিদাবাদের ডোমকল বাজার থেকে ধরে জলঙ্গি থানার পুলিশ।
রবিবার অবশ্য বহরমপুর আদালত থেকে ওই যুবক জামিনে মুক্তি পেয়ে গিয়েছেন। ডোমকলের এসডিপিও অরিজিৎ সিংহ বলেন, “ওই যুবকের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ধারা ছাড়াও ২৯৪ ও ৩৫৪সি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ওই ছবি ইউটিউবে ছড়াতে যুবককে যারা যারা সাহায্য করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, করিমপুর কলেজের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তৃতীয় বর্ষের ছাত্র হাসানের। পরে তা প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, ডোমকলের একটি মেসে দু’জনের কিছু ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি তুলে রেখেছিলেন ডোমকলের মেহেদিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হাসান। কলেজের পড়া শেষ করে তিনি বহরমপুরে একটি বেসরকারি কলেজে বিসিএ কোর্সে ভর্তি হন। এরই মধ্যে ওই তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন হাসান। কিন্তু, ছেলের ‘চরিত্র ভাল নয়’ জানিয়ে দিয়ে মেয়ের বাড়ির লোকেরা বিয়ে নিয়ে আপত্তি তোলেন। পরে মেয়ের অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেন তাঁরা। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সেই সময় হাসান অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে গুরুত্ব দেননি মেয়েটির বাড়ির কেউ। তিতিবিরক্ত তরুণীও শেষমেশ বাড়ির পছন্দের পাত্রকেই বিয়ে করেন।
মাত্র সপ্তাহখানেক আগেই বিয়ে হয়েছে ওই তরুণীর। তাঁর অভিযোগ, বিয়ের পরে ফের তাঁকে ফোন করে সম্পর্ক রাখার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন হাসান। রাজি হননি ওই তরুণী। সেই আক্রোশেই বন্ধুর ল্যাপটপ থেকে ওই অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ইউটিউবের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন হাসান। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে হাসান জানিয়েছেন, এটা করার ফলে যে ‘সাইবার অ্যাক্টে’র আওতায় পড়ে তিনি গ্রেফতার হতে পারেন, তা তাঁর জানা ছিল না। হাসানের বাবা বলেন, “ছেলেকে নিয়ে আমার নাজেহাল। ও অন্যায় করে থাকলে যেন অবশ্যই শাস্তি পায়।”
বছর দু’য়েক আগে এই একই ভাবে ডোমকলের বাগডাঙা এলাকায় এক বিবাহিত মহিলার অন্তরঙ্গ ছবি এমএমএসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল এলাকায়। লজ্জায়, অপমানে আত্মহত্যা করেন ওই মহিলা। হাসানের মতোই ওই ঘটনার অভিযুক্তও পরে জামিনে মুক্ত। হাসানের কোনও শাস্তি হয় কি না, তা জানা সময়ের অপেক্ষা।