জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেন
পঞ্চায়েতগুলিতে পরপর অনাস্থা আনা নিয়ে আলোচনার জন্যে সভা ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেখানেও ‘তাল’ কাটল। জঙ্গিপুরে তৃণমূলের সেই সাংগঠনিক সভায় দল পরিচালিত জঙ্গিপুর পুরসভার বিরুদ্ধেই ‘অনাস্থা’ প্রকাশ করলেন স্থানীয় বিধায়ক।
সূত্রের খবর, জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেন রবিবার দলের জেলা নেতৃত্বের সামনেই পুর প্রশাসক মোজাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আনেন। তাঁর ক্ষোভ দেখে ‘অস্বস্তিতে’ পড়ে যান জেলায় দলের চেয়ারম্যান কানাইচন্দ্র মণ্ডল এবং সভাপতি খলিলুর রহমানও। জাকির এ দিন রাখঢাক না করেই জানিয়ে দেন, জঙ্গিপুর পুরসভার দায়িত্ব পেতে চান তিনি। আর যদি না পান তবে এ বার তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হবেন। জাকিরকে শান্ত করার চেষ্টা করেন উপস্থিত নেতারা। কিন্তু তিনি থামেননি।
জেলা কমিটির ওই সভা ডেকেছিলেন সভাপতি খলিলুর রহমান। যেহেতু জেলা কমিটি এখনও ঘোষিত হয়নি, তাই ঘোষিত শাখা সংগঠনের পাঁচ সভাপতি এবং ন’জন বিধায়ককে ডাকা হয়েছিল সভায়। কিন্তু সভায় আসেননি দুই মন্ত্রী আখরুজ্জামান, সুব্রত সাহা এবং দুই বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস ও আমিরুল ইসলাম। হাজির ছিলেন জাকির-সহ পাঁচ বিধায়ক। খলিলুর বলেন, “দুই মন্ত্রী এবং ইমানি বিশ্বাস আগেই জানিয়ে ছিলেন, তাঁরা অন্যত্র ব্যস্ত থাকবেন বলে সভায় আসতে পারবেন না। বাকিরা কিছু জানাননি। এই পরিস্থিতিতে অনাস্থা নিয়ে বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। শীঘ্রই এ নিয়ে আবার বৈঠক ডাকা হবে।’’ এ দিনের সভায় প্রায় ৪৫ মিনিট বক্তৃতা করেন জাকির। তার মধ্যে ৪০ মিনিট ধরেই জঙ্গিপুরে দলীয় পুর প্রশাসক মোজাহারুলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁর বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তিনি। পাশাপাশি, জঙ্গিপুরে রাস্তাঘাটের দুরবস্থা, পুরসভার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘অসম্মানজনক’ ব্যবহারের অভিযোগ এনে পুর প্রশাসককে তোপ দাগেন তিনি। জাকির আরও বলেন, ‘‘এ বার আমি পুরসভার দায়িত্ব পেতে চাই। যিনি পুরসভাকে লুটেপুটে খাচ্ছেন, তিনি তৃণমূলে নাম লেখালেও আসলে সিপিএম করেন। তাদের পুরসভা থেকে সরাতে হবে।” মোজাহারুলের এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ সব অভিযোগ তো তিনি (জাকির) প্রকাশ্য সভায় আগেও করেছেন। আমি উত্তরও দিয়েছি। আমি আর কোনও মন্তব্য করব না। এ বার দলই যা ব্যবস্থা নেওয়ার, তা নেবে।”