সবিতা সাহা
কুড়িটা বছর! একটা-একটা করে এতগুলো বছর কেটে গেল। কিন্তু, সে দিনের কথা এতগুলো বছরেও ভুলতে পারলাম কই?
দিনটা ছিল ১২ জানুয়ারি। গৃহশিক্ষক সনাতন দে-র সঙ্গে প্রায় ৮০ জন ছাত্রছাত্রী লালবাগে পিকনিক করতে গিয়েছিল। তাদের সঙ্গে আমার ছেলে তমোজিৎও গিয়েছিল। ওর ডাকনাম ছিল পাপ্পু। করিমপুর জগন্নাথ হাইস্কুলে ক্লাস ইলেভেনে পড়ত ও। ছেলে পিকনিক করতে যাওয়ার কথা যখন বলে, আমি রাজি হইনি। শেষ পর্যন্ত ওর বাবা অনুমতি দেওয়ায় আমি আর আপত্তি করিনি। লালবাগ থেকে পিকনিক সেরে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও রাত বাড়তে থাকায় চিন্তা বাড়ছিল। উদ্বেগে সে রাত আর কাটতে চাইছিল না। পরের দিন ভোর প্রায় তিনটে নাগাদ ঘরের দরজায় একটা বিকট শব্দ হয়। ভেবেছিলাম পাপ্পু এল। দু’জনেই দৌড়ে গিয়ে দোর খুলে দেখি, কেউ নেই। তখনই মনটা ‘কু’ ডেকেছিল। বেশ কিছুক্ষণ পরে পদ্মায় বাস পড়ার খবর আসে।
খুব সকালে সেখানে পৌঁছে যাই। বাসের চালকের ঠিক পিছনের সিটে বসেছিল আমার পাপ্পু। এর আগে জলে ডুবে আমার দুই আত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছিল। তাই ছেলেকে গঙ্গায় স্নান করতে বারণ করেছিলাম। পরে শুনেছিলাম, ছেলে আমার কথা শুনে সে দিন পিকনিক করতে গিয়ে গঙ্গায়
স্নান করেনি। পদ্মায় ডুবে গেল।
মৃত তমোজিৎ সাহার মা