গর্ভ নষ্টের ওষুধ খেয়ে মৃত তরুণী

কৃষ্ণগঞ্জের শোনঘাটা এলাকায় গত মঙ্গলবার এই ঘটনার পরেই সুশান্ত পোদ্দার নামে ওই গ্রামীণ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কৃষ্ণগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মৃতা অপর্ণা মজুমদারের (২৭) স্বামী অনিরুদ্ধ মজুমদার। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩৩
Share:

—প্রতীকী ছবি।

কাউকে কিছু না-জানিয়েই এলাকার গ্রামীণ চিকিৎসকের কাছ থেকে ভ্রূণ নষ্ট করার ওষুধ এনে খেয়েছিলেন বিবাহিতা তরুণী। তার পরেই পেটে প্রবল ব্যথা শুরু হয় তাঁর। অভিযোগ, সেই চিকিৎসকই তখন তাঁকে একটি ইঞ্জেকশন দেন। তার পরেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

Advertisement

কৃষ্ণগঞ্জের শোনঘাটা এলাকায় গত মঙ্গলবার এই ঘটনার পরেই সুশান্ত পোদ্দার নামে ওই গ্রামীণ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কৃষ্ণগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মৃতা অপর্ণা মজুমদারের (২৭) স্বামী অনিরুদ্ধ মজুমদার। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ভারতে আইনত গর্ভাবস্থার ২০ সপ্তাহ অর্থাৎ ৫ মাস পর্যন্ত গর্ভপাত বৈধ। তবে পাঁচ মাস হয়ে গেলে ওষুধ দিয়ে ভ্রূণ নষ্ট করা বিপজ্জনক। তখন সাধারণত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে গর্ভপাত করা হয়। অপর্ণাদেবীর ক্ষেত্রে সম্ভবত ওষুধ দিয়ে গর্ভপাত করতে গিয়েই বিপদ হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর,মাজদিয়া বাজারে সুশান্ত পোদ্দারের দীর্ঘ দিনের চেম্বার। পসারও যথেষ্ট। পরিবারের কাউকে না-জানিয়েই গর্ভপাতের জন্য অপর্ণা তাঁর কাছে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন আত্মীয়েরা। ওষুধ খেয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে তাঁর পেটে প্রবল যন্ত্রণা শুরু হয়। তাঁকে ওই গ্রামীন চিকিৎসকের কাছেই নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, তিনি একটি ইঞ্জেকশন দেন। তাতে অবস্থা আরও খারাপ হয়। তখন তিনি অপর্ণাদেবীকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তরুণীর মৃত্যু হয়।

Advertisement

অপর্ণা মজুমদারের দুই ছেলে রয়েছে। এক জনের বয়স আট, অন্য জনের তিন বছর। তাঁর স্বামী অনিরুদ্ধ অন্ধ্রপ্রদেশে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁর কথায়, “পুজোর সময় বাড়ি এলে অপর্ণা আমাকে জানায় যে, সে গর্ভবতী। আমি বাচ্চা নষ্ট করতে বারণ করেছিলাম। কিন্তু ও শুনল না। সেটাই করতে গিয়ে মরেই গেল।’’ অনিরুদ্ধবাবু আরও বলেন, ‘‘ওষুধ খাওয়ার পরে যখন যন্ত্রণা শুরু হয়েছে তখন আমাকে জানায়। তখন আর কিচ্ছু রার ছিল না।” তিনি যে অন্তঃসত্ত্বা, সে কথা গোপন রেখেছিলেন প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের কাছেও।

তাঁর প্রায় সর্বক্ষণের সঙ্গী বড় জায়ের মেয়ে মধুমিতা কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, “কাকিমা ছিল আমার বন্ধুর মত। তা-ও আমাকে কিচ্ছু জানতে দেয়নি। পেট ফুলছে কেন জানতে চাইলে বলত, পেটে জল হয়েছে। ডাক্তার দেখাতে হবে। নিজের এত বড় ক্ষতি করে ফেলল ও।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement