তৃণমূলের দুই বিধায়কের বিরুদ্ধে মামলা। প্রতীকী চিত্র।
পাশাপাশি দুই বিধানসভায় তৃণমূল বিধায়কের নাম জড়িয়েছে নিয়োগ দুর্নীতিতে। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে তা থেকে বিরোধীরা কতটা ফায়দা তুলতে পারবে, নিশ্চিত নয়।
পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য বর্তমানে জেলে বন্দি। অপর জন, তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। সিবিআই এখনও তেহট্টে হানা দেয়নি। তবে তাতে তৃণমূলের অস্বস্তি যে খুব কমছে, তা নয়। উল্টে জেলা পরিষদের সদস্য টিনা ভৌমিক সাহা প্রকাশ্যে বিধায়কের বিরুদ্ধে বার বার মুখে খুলে সেই অস্বস্তি বাড়িয়েছেন।
প্রত্যাশিত ভাবেই, বিজেপি এই পরিস্থিতির ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করবে। গত বিধানসভা নির্বাচনে তেহট্ট কেন্দ্রে প্রায় ৯০ হাজার ভোট পেয়েছিল বিজেপি। চার হাজার ভোটে জিতেছিল তৃণমূল। গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে বিজেপিই এগিয়ে ছিল। তবে ২০১৮ সালে স্থানীয় মোট ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র দু’টি তারা দখল করতে পেরেছিল। দলীয় সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই তারা প্রত্যেক বুথে কর্মিসভা শুরু করেছে। জেডপি কার্যকর্তারা বাড়ি-বাড়ি প্রধানমন্ত্রী জলকল্যাণ কর্মসূচির গৃহ সম্পর্ক অভিযান শুরু করেছেন।
অন্য আর এক স্রোতও আছে। গত এক মাসে তেহট্ট বিধানসভা কেন্দ্রে হাজারেরও বেশি তৃণমূল কর্মী-সমর্থক তাদের সঙ্গে যোগদান করেছে বলে সিপিএম-কংগ্রেসের দাবি। বিজেপির দাবি, তৃণমূলের ভোট সিপিএম বা কংগ্রেসে গেলে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা বাদে তেহট্টের সব ক’টি পঞ্চায়েতে ভাল ফলের আশা দেখছে তারা। নদিয়া জেলা উত্তর বিজেপি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের দাবি, “চোরের দলকে আর কেউ ভোট দেবে না।”
তবে পলাশিপাড়া কেন্দ্রে অর্ধেকের বেশি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। সেখানে গত বিধানসভা নির্বাচনেও ভাল ফল করতে পারেনি বিজেপি। বড় ব্যবধানে জেতেন মানিক ভট্টাচার্য। পলাশিপাড়া তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান লাল মহাম্মদ মণ্ডলের মতে, “পরিযায়ী পাখির মতো এসেছিলেন মানিক। সেই কারণে বিরোধীরা কিছুটা গুছিয়ে নিয়েছে।” এই কেন্দ্রে আবার সিপিএমের দাপট বেশি। ২০১১ সালে মানিককে হারিয়েই এখানে বিধায়ক হন সিপিএমের এস এম সাদি। পরের বার আর প্রার্থী করা হয়নি মানিককে। সিপিএমের দাবি, গত পঞ্চায়েত ভোটে তারা ১২৫টি বুথে প্রার্থীই দিতে পারেনি। দলের পলাশিপাড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক সলিল করের দাবি, “প্রত্যেক বুথে কমিটি গঠন এবং সব বুথে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে আর সমস্যা হবে না।”
তবে তেহট্ট ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাসের দাবি, “আমাদের সংগঠন শক্ত আছে। মানুষ উন্নয়ন দেখছে।”