স্কুলের মাঠেই বিয়ের ম্যারাপ

বাড়ির পাশেই স্কুল। তাই অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি কলকাতা পুলিশের কর্মী তাপস হাজরা। সটান স্কুলের মাঠেই পেল্লায় প্যান্ডেল বানাতে শুরু করেন তিনি। হইচই শুরু হতে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে হল ধানতলার বাসিন্দা তাপসকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০১:০৮
Share:

থমকে: ধানতলা স্কুলের মাঠে অর্ধেক পড়ে থাকা প্যান্ডেল। —নিজস্ব চিত্র।

বাড়ির পাশেই স্কুল। তাই অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি কলকাতা পুলিশের কর্মী তাপস হাজরা। সটান স্কুলের মাঠেই পেল্লায় প্যান্ডেল বানাতে শুরু করেন তিনি। হইচই শুরু হতে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে হল ধানতলার বাসিন্দা তাপসকে।

Advertisement

আগামী রবিবার বৌভাতের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি পিন্টু দুবে শুক্রবার জানিয়ে দেন, স্কুলের মাঠ থেকে প্যান্ডেল সরিয়ে নিতে হবে। এতে অভিযোগ উঠেছে, পিন্টুবাবুই তাঁর ঘনিষ্ট তাপসকে স্কুলের মাঠে প্যান্ডেল করার অনুমতি দেন। পিন্টুবাবু বলছেন, ‘‘সামাজিকতার খাতিরেই হ্যাঁ বলেছিলাম। বিতর্ক হচ্ছে দেখে তা খুলে নিতে বলেছি।’’

কলকাতা পুলিশের কর্মী তাপসের বাড়ি ধানতলা হাইস্কুলের পাশে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দিন কয়েক আগে আচমকা স্কুলের মাঠে ম্যারাপ বাঁধা শুরু হয়। অনেকেই ভেবেছিলেন সরকারি কোনও অনুষ্ঠান হবে। কারণ মাঝে মধ্যেই সরকারি অনুষ্ঠান হয় স্কুলের মাঠে। স্কুল কর্তৃপক্ষও চমকে যান। কারণ, কোনও সরকারি অনুষ্ঠানের খবর তাঁদের কাছে নেই। আবার অন্য কেউ স্কুলের কাছে মাঠ ব্যবহারের অনুমতিও চায়নি। তা হলে? পরে তাঁরা জানতে পারেন তাপসের বৌভাতের জন্য প্যান্ডেল বাঁধা হচ্ছে।

Advertisement

এই ঘটনায় চরম ক্ষোভ জানান স্কুল-শিক্ষকদের একাংশ। কিন্তু তাপস স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতির ঘনিষ্ট। ফলে কেউ মুখ খোলার সাহস করেননি। এ দিকে, স্কুল চলাকলীন প্যান্ডেলের কাজ চলছে বলে পড়ুয়াদের চরম অসুবিধা হচ্ছে বলে জানান অভিভাবকেরা। স্কুলের শিক্ষকরাও জানান, তাঁদেরও সমস্যা হচ্ছে।

ধানতলা প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুরঞ্জন মজুমদার জানান, তাঁর কাছে মাঠ ব্যবহার করে প্যান্ডেলের অনুমতি কেউ নেয়নি। একই কথা জানান হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শি‌ক্ষক অশোক হাজরাও। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি স্কুল পরিচালন সমিতিকে জানিয়েছি।’’

কী বলছেন তাপসবাবু? তিনি বলেন, ‘‘বৌভাতের অনুষ্ঠান রাখা হয়েছে রবিবার। সে দিন তো স্কুল থাকে না। লিখিত অনুমতি না নিলেও আমি স্কুল কর্তৃপক্ষকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলাম।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘‘অনুষ্ঠান শনিবার কী রবিবার, সেটা কথা নয়। প্রশ্ন হল, সবাই কি এই অনুমতি পাবে? নাকি স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতির দাক্ষিণ্যেই এমন অনুমতি মিলবে?’’

বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকেই হইচই শুরু হয়ে যায়। খোঁজখবর শুরু করে সংবাদমাধ্যমও। এ দিন বিকেল থেকে পট পরিবর্তন হয়। পিন্টুবাবু বলেন, ‘‘অহেতুক বিতর্ক হোক চাই না। তাই ওদের বলেছি প্যান্ডেল খুলে নিতে। একটা ত্রিপল শুধু লাগানো হয়েছিল। ওটা ওরা খুলে নেবে।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, একটা ত্রিপল নয়, প্যান্ডেলের বেশিরভাগটাই হয়ে গিয়েছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement