গ্রামবাসীদের অভিযোগ শুনছেন বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র
এতদিন নাকি অভিযোগ করতে ভয় পেয়েছিলেন। এ বার সুযোগ পেয়েছেন। ‘দিদির দুত’ কর্মসূচিতে বার্ধক্য ভাতা ও ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার প্রকাশ্যে অভিযোগ জানালেন গ্রামবাসীরা। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে করিমপুর বিধানসভা এলাকার গোপালেরপাড়া গ্রামে। এ দিন গ্রামে বিধায়ক গেলে অভিযোগ জানান তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়, করিমপুর ১ ব্লক সভাপতি আশিসকুমার চট্টোপাধ্যায়-সহ এলাকার নেতাকর্মীরা এলাকার সমস্যা কথা শুনতে গোপালেরপাড়া গ্রামে গিয়েছিলেন। তাঁদের দেখে বেশ কিছু মানুষ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের নাম করে তাঁদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন।
যেমন, গ্রামের বিশু শেখ, সিরাজ শেখ, শুকুর শেখ-সহ একাধিক ব্যক্তি বিধায়ককে অভিযোগ করেন, প্রায় বছরখানেক আগে আমাদের বার্ধক্য ভাতা করিয়ে দেওয়া হবে বলে মাথাপিছু দু’হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজও পর্যন্ত তাঁরা বার্ধক্য ভাতা পাননি। যাঁরা তাঁদের কাছে থেকে টাকা নিয়েছিলেন, তাঁরাও ফেরত দেননি।
আবার গ্রামের একাধিক বাসিন্দা বিধায়ক তৃণমূল নেতাদের সামনে ঘর দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তোলেন। অভিযোগকারীরা বলেন, ‘‘আমরা সকলেই ঘর পেয়েছি কিন্তু ঘর পাওয়ার আগে আমাদেরকে স্থানীয় তৃণমূলের নেতারা জানিয়েছিলেন যে আগে থেকে টাকা না দিলে নাম এলেও তাঁদের নাম বাদ যাবে। বাধ্য হয়ে কেউ পাঁচ হাজার, দশ হাজার এমনকি গ্রামের দু’এক জন ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত টাকা দিয়েছেন।’’
গ্রামের বেশ কয়েক জন গোপালেরপাড়া গ্রামের আলম শেখ, কালাম শেখ, তাবিজুল শেখ, গোলাম শেখের নামে প্রকাশ্যে বিধায়কের কাছে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। তবে তাবিজুল শেখের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। বাকিরা বলেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। আমাদেরকে যদি ওঁরা কেউ টাকা দিয়ে থাকেন, তা হলে আগেই বলতে পারতেন হঠাৎ করে আজকে কেন। টাকা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যে।’’ যদিও অভিযোগকারীরা জানান, এত দিন তাঁরা ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি।
করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায় দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, ‘‘দলের কর্মসূচি অনুযায়ী গ্রামে যেতেই আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের কথা শুনেছি। আমি দলীয় ভাবে যা ব্যবস্থা করার সে’’টা করব। পাশাপাশি পুলিশ ও প্রশাসনের কাছেও লিখিত অভিযোগ জানাতে বলেছি।’’