প্রচার। টোটোয় চেপে। ডোমকলে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম।
কেউ ছেড়েছেন ওমনি মারুতি। কেউ গ্যারাজে ফেলে রেখেছেন সাধের স্করপিও। কেউ আবার না বলে দিয়েছেন হুডখোলা জিপকে।
ডোমকলের পুরভোটে তাহলে প্রচার চলছে কীসে?
তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি-সহ সব দলেরই একটাই উত্তর— কেন, টোটোয়!
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ডোমকলের অলিগলি তস্য গলিতে মাথায় মাইক বেঁধে ছুটে বেড়াচ্ছে টোটো কোম্পানি। চালকও বাড়ির পাশের। এক ফোনেই হাজির হয়ে যান হাসি মুখে। ভাড়াও অন্য বাহনের থেকে বেশ কম। ফলে ফুরফুরে হাওয়া খেতে খেতে লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে সেই টোটোতেই বেরিয়ে পড়ছেন প্রার্থীরা।
শুধু প্রচারেই নয়, টোটোর কদর বেড়েছে সেই শুরু থেকে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া থেকে শুরু করে মিটিং-মিছিলে লোক আনার ক্ষেত্রেও প্রথম থেকেই এগিয়ে আছে টোটো। রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, এর আগে এলাকায় এত টোটো ছিল না। তখন প্রচারে খরচও ছিল অনেক বেশি। এখন এলাকায় টোটোর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সকলেই এখন টোটোতে ঝুঁকেছে।
প্রার্থী তথা রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সৌমিক হোসেন স্করপিওতে যাতায়াত করেন। গত বিধানসভায় প্রচারে ওই গাড়ির পাশাপাশি তাঁকে দেখা গিয়েছিল হুডখোলা জিপেও। কিন্তু এ বার সেই সৌমিকও বেছে নিয়েছেন টোটোকেই। তিনি বলছেন, ‘‘বড় গাড়ি নিয়ে গলিতে ঢুকতে অসুবিধা হয়। বার বার গাড়ি থেকে ওঠানামারও বড্ড হ্যাপা। টোটোতে সে সব ঝামেলা নেই।’’
জোট প্রার্থী আব্দুল জলিল, বিজেপি প্রার্থী বাসুদেব পাল কিংবা তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ বেগমেরাও ভোট দিচ্ছেন টোটোকেই। তাঁদের কথায়, ‘‘টোটোতে বসেই সকলের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া খরচও তো অনেক কম।’’
চালকেরাও জানাচ্ছেন, ভোটের মরসুমে আয়ও খারাপ হচ্ছে না। আর টোটো মালিক যদি দলেরই কর্মী হন? হাসতে হাসতে এক প্রার্থী বলছেন, ‘‘তাহলে তো আর দরদামের প্রশ্নই নেই। উপরি পাওনা চালকও দলীয় কর্মী!’’
‘হ্যালো, হ্যালো...মাইক্রোফোন টেস্টিং...আসন্ন পুরভোটে...’— টোটো এগিয়ে যায় পাশের পাড়ায়।