ভাঙন রুখতে সেই ভেটিভার

মেদিনীপুর ও নদিয়া জেলায় ভেটিভার ব্যবহার করে নদী ভাঙন ঠেকানোর কাজে যথেষ্ট সাফল্য মিলেছে। সেই সাফল্য দেখেই ফরাক্কায় ভাঙন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে একটি ওয়ার্কশপও করে গেছেন জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চিত প্রকল্পের কমিশনার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ফরাক্কা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৭ ০২:৪২
Share:

ঘাস-চাষ। বৃহস্পতিবার ফরাক্কায়। নিজস্ব চিত্র

নদিয়ার পর মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় নদী ভাঙন রুখতে দু’পাড়ে ভেটিভার ঘাস লাগানোর কাজ শুরু করল পঞ্চায়েত। ইতিমধ্যেই ফরাক্কায় ১৭টি নার্সারি তৈরি করা হয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দিয়ে। সেগুলিতে প্রায় ১৫ লক্ষ ভেটিভার ঘাসের চারা তৈরি করা হয়েছে।

Advertisement

ব্লকের বিডিও কেশাং ধেনডুপ ভুটিয়া বলেন, “ব্লকের নটি পঞ্চায়েতের মধ্যে বাগমারি, মাসনা, গঙ্গা ইত্যাদি নদীর ভাঙনে ফরাক্কার প্রায় ৬০ শতাংশ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত। এই নদী ভাঙন ঠেকাতেই একশো দিনের কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্পে বর্ষার মুখে পাড়ে ভেটিভার ঘাস লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’

মেদিনীপুর ও নদিয়া জেলায় ভেটিভার ব্যবহার করে নদী ভাঙন ঠেকানোর কাজে যথেষ্ট সাফল্য মিলেছে। সেই সাফল্য দেখেই ফরাক্কায় ভাঙন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে একটি ওয়ার্কশপও করে গেছেন জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চিত প্রকল্পের কমিশনার। তার পরই তামিলনাডু থেকে ৩০ হাজার ভেটিভার ঘাসের চারা এনে নার্সারি গড়ে তোলা হয়।

Advertisement

ইতিমধ্যেই বাগমারি নদীর পাড়ে ভেটিবার ঘাস লাগানোর কাজ শুরু করেছে মহাদেবনগর গ্রাম পঞ্চায়েত।

ভাঙন রোধের কাজে ভেটিবার ঘাস ব্যবহার করার এই প্রকল্পটি ফরাক্কায় রূপায়ণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ব্লকের টেকনিক্যাল অ্যাসিস্টেন্ট নরেন দাসের উপর।

তিনি বলেন, “প্রতি ৪ হাজার বর্গমিটারে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার ঘাস লাগানো হচ্ছে। এখনও প্রায় ১৩ লক্ষ গাছ রয়েছে। এরপর নয়নসুখ, বেনিয়াগ্রাম , মহেশপুর সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতকেই কর্মনিশ্চিত প্রকল্পে ভেটিবার ঘাস পিচিং স্কিম তৈরি করতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে পঞ্চায়েতগুলির ততপরতা দরকার।”

তিনি জানান, ইতিমধ্যেই মহেশপুরে রাজ্য সেচ দফতর গঙ্গা ও বাগমারির মোহনার কাছে ভাঙন রোধের কাজ শুরু করেছে। সেই স্পারের পিছনে একই ভাবে ভেটিভার ঘাস লাগানো হবে যাতে স্পারের সাহায়্যাকারী হিসেবে কাজ করতে পারে তা।

রাজ্য সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত মজুমদার বলেন, “ভেটিভার ঘাস আসলে গুচ্ছমূল হিসেবে প্রায় ৩ মিটারেরও বেশি মাটির তলায় গিয়ে মাটিকে ধরে রাখতে সাহায্য করে। সেই কারণেই নদী পাড়ে এই ঘাস লাগালে সহজে ধসে যেতে পারে না পাড়। এমনকী বৃষ্টিতেও পাড়ের ভূমিক্ষয় আটকানো যায় এতে।’’

ইতিমধ্যেই মমরেজপুর সেতুর কাছে বাগমারি নদির পাড়ে ২০০ মিটার লম্বা ও ২০ মিটার চওড়া এলাকা জুড়ে পিচিং করে ভেটিভার লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। কাজ চলছে বাগমারি সেতু, মহেশপুর পুল ও গোপালপুরে। শনিবার শুরু হবে মমরেজপুর সেতুর পরের অংশের কাজ। মহাদেবনগরের এই কাজে খরচ হবে ৪ লক্ষ টাকা। সবটাই একশো দিনের কাজে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement