বসার জায়গা নিয়ে মারামারি তৃণমূল কর্মীদের। — নিজস্ব চিত্র।
মঞ্চে উপস্থিত মন্ত্রী ও বিধায়ক। তাঁদের উপস্থিতিতে হাতাহাতিতে জড়ালেন কর্মীরা। মঞ্চের আসন দখল নিয়ে কার্যত খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায়।
ভগবানগোলায় ছিল তৃণমূলের সাংগঠনিক সভা। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান। ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক মহম্মদ। নতুন ব্লক সভাপতির নাম প্রকাশ হতেই শুরু হয় হট্টগোল। মন্ত্রীর বক্তৃতার প্রায় শেষে দলের নবনিযুক্ত ব্লক যুব সভাপতি ফারুক আব্দুল্লাহ, ব্লক মহিলা সভাপতি হাসিনা বানু এবং ব্লক শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি সাবরুজ্জামানকে মঞ্চে ডেকে নেন। তাঁদের নাম ঘোষণা হতেই বিক্ষোভ শুরু করেন প্রাক্তন ব্লক সভাপতির অনুগামীরা। তাঁদের অনুযোগ, আগে থেকে প্রত্যেকের আসন নির্দিষ্ট রয়েছে। তার পরও কেন শুধুমাত্র তিন জনকে মঞ্চে ডাকা হল? এই প্রশ্ন তুলে শুরু হয় বচসা। মুহূর্তের মধ্যে বিতণ্ডা গড়ায় মারামারিতে। তখন অবাক হয়ে নিজেদের আসনে বসে থাকতে দেখা যায় মন্ত্রী ও বিধায়ককে।
এ নিয়ে মহম্মদ আলির প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওই মঞ্চে আট জনের বসার আসন নির্দিষ্ট ছিল বলে শুনেছি। বিধায়ক, মন্ত্রী, ব্লক সভাপতি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, দুই জেলা পরিষদ সদস্য এবং দুই ব্লক সহ-সভাপতির বসার আসন নির্দিষ্ট হয় মঞ্চের ওপরে। বাকিদের বসার জন্য মঞ্চের সামনে আসন রাখা হয়। কোনও রকম বিতর্ক এড়াতে প্রত্যেকটি আসনে নির্দিষ্ট ব্যক্তির নাম ও পদ উল্লেখ করে দেওয়া হয়। তিন জনের নামে নির্দিষ্ট আসন মঞ্চে না থাকলেও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান তাঁদের মঞ্চে আহ্বান জানাতেই বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েক জন।’’ গোটা ঘটনাকে অনভিপ্রেত বলেন তিনি।
অন্য দিকে, ভগবানগোলা ব্লকের তৃণমূল নেতা সাবির আলির মন্তব্য, ‘‘আমরা সবাই যখন মঞ্চের সামনে নির্দিষ্ট আসনে বসে আছি, তখন হঠাৎ করে তিন জনকে মঞ্চে ডেকে নিয়ে বাকিদের অপমান করার অধিকার কারও নেই।’’
যদিও গোটা ঘটনায় মন্ত্রী তাঁর নিজের ভুল হয়েছে বলে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যে হেতু যুব মহিলা এবং শ্রমিক সংগঠনের ব্লক সভাপতিরা রাজ্য স্তর থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন, তাই তাঁদের মঞ্চে ডেকেছিলাম। আসন নির্দিষ্ট করার ব্যাপারটা জানা ছিল না। আমার এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছি।’’ ভগবানগোলা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই সাংগঠনিক সভার আয়োজকের দায়িত্ব থাকা নবনিযুক্ত ব্লক সভাপতি মহাম্মদ এরশাদ আলির দাবি, তাঁর প্রতি ব্যক্তিআক্রোশে কিছু মানুষ পরিকল্পিত ভাবেই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘মন্ত্রীর ঘোষণার পরেই বিতর্ক থেমে যাওয়া উচিত ছিল। দলবিরোধী এই পরিকল্পিত চক্রান্ত বরদাস্ত করবে না তৃণমূল।’’