Krishnanagar

মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর কার উপরে কোপ, ভয়ে সিঁটিয়ে নেতা

তেহট্ট এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা দলীয় কোন্দল প্রবল আকার নিয়েছে। তাপস সাহার প্রতি নেত্রী কী মনোভাব দেখাবেন, সেটা বুঝে নিতে চাইছেন দলের নেতা-কর্মীরা।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২২ ০৯:৪৯
Share:

ফাইল চিত্র।

এক কঠিন সময়ে নদিয়া সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী, যখন তার দলেরই একাধিক বিধায়ক-নেতাকে নিয়ে বিতর্ক দানা পাকিয়েছে।

Advertisement

টেট দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা পলাশাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখা তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে। বিতর্ক দানা বেঁধেছে কল্যাণী ও হরিণঘাটার দুই নেতাকে ঘিরেও।

আবার দু’দিন আগেই করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়কে আচমকা জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। করিমপুরে দলের অন্দরে বিমলেন্দু গোষ্ঠী বনাম মহুয়া মৈত্র গোষ্ঠীর লড়াইয়ের অভিযোগ অনেকদিনের। সব মিলিয়ে দল যখন বেশ অস্বস্তিতে ঠিক তখনই জেলা সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাভাবিক ভাবেই দলের ভিতরেই প্রশ্ন উঠছে, এ বারের সফরে মুখ্যমন্ত্রী কি এঁদেরকে কোনও নির্দিষ্ট বার্তা দিয়ে যাবেন? কারও উপর কি পড়তে পারে কোপ?

Advertisement

তেহট্ট এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা দলীয় কোন্দল প্রবল আকার নিয়েছে। তাপস সাহা প্রতি নেত্রী কী মনোভাব দেখাবেন, সেটা বুঝে নিতে চাইছেন দলের নেতা-কর্মীরা। যদিও তাপসের কথায়, “নেত্রী জানেন যে, আমি কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গে কোনও দিন জড়িত ছিলাম না, আজও জড়িত নই।”

দু’দিন আগেই করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়কে জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বিমলেন্দুর বিরোধীরা বলছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে নেত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে তিনি করিমপুরের বিধায়কের ডানা ছাঁটলেন। আবার বিমলেন্দুর অনুগামীদের দাবি, তাহলে ক’দিন আগেই তাঁর ঘনিষ্ঠদের ব্লক সভাপতি পদে বসানো হল কেন? এর মধ্যে মহুয়া মৈত্রের ঘনিষ্ঠেরা বিষয়টি নিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছেন।

গত জেলা সফরের প্রশাসনিক বৈঠকে কৃষ্ণনগর পুরসভা ভোটের আগে মহুয়াকে কড়া বার্তা দিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্চায়েত ভোটের আগেও তেমন কোনও বার্তা দিয়ে যান কিনা, সেটাও বুঝে নিতে চাইছেন অনেকে। বিশেষ করে যেখানে কিছু দিন আগে কলকাতায় দলীয় কর্মসূচিতে করিমপুর নিয়ে মহুয়াকে মাথা ঘামাতে বারণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সেখানে জেলা সফরে এসে তিনি কী অবস্থান নেন, সেটাই দেখতে চাইছেন অনেকে। এ ব্যাপারে একাধিক বার ফোন করেও পাওয়া যায়নি মহুয়া মৈত্রকে। আর বিমলেন্দু সিংহরায় বলেছেন, “নেত্রী আমাকে ভাল করেই জানেন। তিনি যদি কোনও বার্তা দেন আমি সেটা আমার সর্বোচ্চ দিয়ে পালন করব।”

দক্ষিণে হরিণঘাটার দাপুটে নেতা বলে পরিচিত চঞ্জল দেবনাথ সম্প্রতি ব্লক সভাপতি পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন। তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। চঞ্চলকে নিয়েও নেত্রীর অবস্থান কী হতে চলেছে তা নিয়েও যথেষ্ট কৌতুহল আছে দলের ভিতরে। যদিও চঞ্চলবাবু বলছেন, “আমি নিজেই ব্লক সভাপতি পদ থেকে অব্যহতি চেয়েছিলাম। কে কী বলল তা নিয়ে আমি ভাবতে চাই না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement