পুর-যুদ্ধ। বহরমপুর পুরসভায়। নিজস্ব চিত্র
নিতান্তই স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য, পুরপ্রধানের কাছে, একটা দিন চেয়েছিল কংগ্রেসের জনপ্রতিনিধিরা। তাঁদের অভিযোগ, সপ্তাহ ঘুরে গেলেও সেই সময় আর দিতে পারছিলেন না পুরপ্রধান।
কংগ্রেসের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘দিতে পারেননি নয়, দিতে চাননি!’’ আর তার জেরেই, বৃহস্পতিবার, জোর করেই পুরসভায় ঢুকে পুরপ্রধান, সদ্য দলবদল করা নীলরতন আঢ্যের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল কংগ্রেস।
বাধা পেতেই শুরু হয়েছিল বচসা। অভিযোগ, এই সময়ে, পুরসভার করিডরে এক কংগ্রেস নেতা গালমন্দ শুরু করায় তৃণমূলের সমর্থক পুরকর্মীদের সঙ্গে শুরু হয়েছিল কথা কাটাকাটি। কিছুক্ষণের মধ্যেই তা হাতাহাতিতে গড়ায়। সে খবর দু’দলের কার্য়ালয়ে পৌঁছতেই দলে দলে সমর্থকেরা ভিড় করতে থাকেন পুরসভায়। তার পর, কার্যত একটা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়।
গন্ডগোল ক্রমেই পুরসভার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ার উপক্রম হয়। তবে, পুলিশের তৎপরতায় জল বেশি দূর গড়ায়নি। লাটে ওঠে পুরসভার যাবতীয় কাজকর্ম। আতঙ্কিত হয়ে এ দিক ও দিক ছুটতে তাকেন পুরসভায় আসা সাধারন মানুষ। পুরসভা ছেড়ে পালাতে তাকেন পুরকর্মীরাও।
প্রায় ঘণ্টা কানেকের চেষ্টায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘পুরকর্মীরা তাদের যাবতীয় অভাব-অভিযোগের কথা পুরপ্রধানের কাছে জানাতে গেলে তাঁদের মারধর করা হয়েছে। তা করেছে বহিরাগতরা। যাদের আগে থেকেই পুরসভায় জড় করে রাখা হয়েছিল।’’
তিনি জানান, মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদ, বহরমপুর পুরসভা-সহ জেলার বিভিন্ন পুরসভায় নির্বাচনে জয়ী না হয়েও দখলদারি দিয়ে তৃণমূল প্রমাণ করেছে তারা নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় বিশ্বাস করে না।
তৃণমূলের যুব নেতা সৌমিক হেসেন পাল্টা দাবি করেন, ‘‘অধীর চৌধুরী অতীত নিয়ে পড়ে রয়েছেন। তিনি বছরের অধিকাংশ সময়ে দিল্লিতে পড়ে থাকার কারণে জেলার রাজনীতি বুঝতে পারছেন না যে, তাঁর পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে।’’
মাস কয়েক আগেও তিনি ছিলেন অধীর ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসের পুরপ্রধান, সেই নীলরতন আঢ্য বলেন, ‘‘শান্তিপ্রিয় বহরমপুর শহরকে পরিকল্পনা করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অশান্ত করতে চাইছেন।’’
প্রসঙ্গত, পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য-সহ অধিকাংশ কাউন্সিলর গত অগস্টে শাসকদলে যোগ দেওয়ায় বহরমপুর পুরসভা কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে।