প্রণববাবুকে স্মরণ। নিজস্ব চিত্র
জন্মদিনে প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে স্মরণ করল তৃণমূল। নীরব রইল কংগ্রেস। তবে কংগ্রেস কাউন্সিলররা পুরসভার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
জঙ্গিপুর পুরসভাকে সামনে রেখে তামাম তৃণমূলের নেতারা সামিল হলেন রবিবার জঙ্গিপুরে প্রণববাবুর ৮৮ তম জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানে। অফিস পাড়ায় জঙ্গিপুরের মহকুমা শাসকের অফিসের সামনে বসানো হল প্রণব মুখোপাধ্যায়ের শ্বেত পাথরের আবক্ষ মূর্তি। দাদাঠাকুরের পণ্ডিত প্রেস থেকে এসডিও অফিস পর্যন্ত র
ঘুনাথগঞ্জ শহরের প্রধান সড়কের নামকরণ করে ঘোষণা হল ‘প্রণব মুখোপাধ্যায় সরণি’ হিসেবে। তবে কংগ্রেস কোথাও কোনও অনুষ্ঠান না করলেও কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএমের পুর কাউন্সিলাররা সকলেই যোগ দিলেন পুরসভার এই অনুষ্ঠানে।
২০০৪ সালে নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও এক রকম জোর করেই জঙ্গিপুর থেকে প্রণববাবুকে দাঁড় করান অধীর চৌধুরী। পরাজয়ের ধারাবাহিক গ্লানি কাটিয়ে জীবনে প্রথম জয়ের স্বাদ পান প্রণববাবু। ২০০৯ সালে জয়ের ব্যবধান বাড়ে প্রায় ৪ গুণ। গোটা মুর্শিদাবাদ তখন কংগ্রেসময়।সেই কংগ্রেস কার্যত প্রায় তচনচ আজ মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের ঝড়ে।
পুরপ্রধান মফিজুল ইসলাম বলেন, “প্রণববাবু যে আমাদের মধ্যে নেই সেই অভাবটা আমরা বুঝতে পারছি। আজ জঙ্গিপুর পুরসভা যে আম্রুত প্রকল্প ভুক্ত হয়েছে তাতে প্রণববাবুর অবদান সবচেয়ে বেশি।”তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন বলেন, “প্রণববাবুর না থাকাটা আমাদের কাছে কষ্টের। বীরভূমের গন্ডগ্রাম থেকে দেশের রাষ্ট্রপতি হবেন কেউ কখনও ভাবেননি।”
যে জঙ্গিপুর ২০০৪ ও ২০০৯ সালে দু’দু’বার সাংসদ হওয়ার সম্মান দিয়েছে প্রণববাবুকে, সেখানে তাঁর ছবিতে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মালা দেওয়ার আয়োজনও হল না কোথাও। প্রণববাবুর পর তাঁর ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় দু’বার সাংসদ হয়েছেন জঙ্গিপুরে কংগ্রেসের টিকিটে। অভিজিৎ এখন তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। প্রণববাবুর দৌলতে যারা কংগ্রেস রাজনীতিতে জঙ্গিপুরে প্রতিপত্তি পেয়েছেন তাদের প্রায় সকলেই এখন দিদির ঘাসফুলে। কেউ বা হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রীও। সুতির কংগ্রেস নেতা আশিস তিওয়ারি বলছেন, “কংগ্রেস কিছুটা দুর্বল হয়েছে, কিন্তু আদর্শচ্যুত হয়নি। জন্মদিন পালনটাই সব নয়।”
কংগ্রেসের জেলার সাধারণ সম্পাদক নবগ্রামের ধীরেন্দ্র নাথ যাদব বলছেন, “কথায় আছে না মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি। সেই অবস্থা তৃণমূলের। প্রণববাবুর জন্মদিন পালনের নামে তাঁর নামটা ব্যবহার করছেন মাত্র। এক দিন জন্মদিন পালন করে নয়, প্রণববাবু কংগ্রেসকর্মীদের কাছে সারা জীবনের আদর্শ।”
জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত দাস বলেন, “দলীয় কর্মীরা ব্যস্ততার জন্য হয়ত অনুষ্ঠান করতে পারেননি। কিন্তু প্রণববাবু রয়েছেন প্রতিটি কংগ্রেস কর্মীর মনে। তৃণমূল প্রণববাবু হাইজ্যাক করতে চাইছে।”তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান প্রণবপুত্রকে হারিয়েই জয়ী হয়েছেন জঙ্গিপুরে। খলিলুর বলছেন, “প্রণববাবু কোনও দলের নয়, দেশের। তাই তাঁর জন্মদিন পালন মানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো। আমরা সেটাই করেছি।”