শোকস্তব্ধ: শনিবার দেহ মিলিল উম্মে সালমা (ডান দিকে, উপরে) ও তার মা জহুরা বিবির (ডান দিকে, নীচে)। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন জহুরার আত্মীয়। নৌকাডুবির ঘটনায় মাঝিদের বিরুদ্ধে মামলা করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম
অবশেষে ৩৬ ঘণ্টা পরে শান্ত হল ভৈরবের উদ্বিগ্ন ঘাট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নৌকাডুবির পর থেকে তার বুকে শুরু হয়েছিল তোলপাড়। প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় মানুষ ও প্রশাসন তল্লাশি শুরু করলেও ঘটনার পর দিন, শুক্রবার ভোর থেকে নেমেছিল এনডিআরএফের উদ্ধারকারী দল। দিনভর তল্লাশি চালিয়েও কোনও দেহের সন্ধান করতে পারেনি তারা। শেষে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৪ কিমি দুরে গঙ্গাধারী সেতুর নিচ থেকে শনিবার সকালে উদ্ধার হয় জহুরা বিবির দেহ। পরে আরও কিছুটা দুরে তার মেয়ের দেহটি উদ্ধার হলেও ১৭ মাসের আলামিনের দেহটি মেলে প্রায় ১৪ কিমি দুরে নদিয়ার ফাজিলনগর এলাকায়।
ডোমকলের এসডিপিও মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘শনিবার সকালেই তিনটি দেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহগুলি ময়নাতদন্ত করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’’ অন্যদিকে মৃতদের পরিবারের হাতে এদিন ডোমকলের মহকুমা শাসক দিব্যা লোগনাথন ২ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিয়েছেন তাদের বাড়িতে গিয়ে।অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের ফলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মধ্য গরিবপুর ঘাটে ডুবে গিয়েছিল ফেরির নৌকা। আর তার পর থেকে নিখোঁজ হয়েছিল দু’টি শিশু-সহ এক মহিলা।
টানা তল্লাশিতেও তাদের দেহ না মেলায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল ডোমকলের ওই এলাকায়। শনিবার দেহ মেলায় কিছুটা হলেও হাঁফ ছেড়েছে প্রশাসনের কর্তারা। তাদের দাবি, ভৈরবে এখন প্রচুর জল। তা ছাড়া শ্রোতও আছে প্রবল। ফলে দেহ তল্লাশিতে খুব সমস্যা তৈরী হয়েছিল। তবে শনিবার সকালেই ৩টি দেহের খোঁজ মিলেছে। পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়াও হয়েছে।
দেহ উদ্ধার হতেই ভৈরবের পাড় থেকে শোকের ছায়া। কল্যানপুর ও বৃন্দাবনপুর গ্রামেও একই ছবি। মা মেয়ে জহুরা বিবি ও উম্মে সালমার দেহ গ্রামে পৌঁছতেই হাজারও মানুষ ভিড়।