মানসিক স্থিরতা ছিল না তাঁর। মেধার স্বল্প বিকাশ হওয়া আর পাঁচ জন মানুষের সঙ্গে অসংবেদনশীল পাড়া-পড়শি যেমন ব্যবহার করেন, হাসি-ঠাট্টা, টিটকিরি— তেমনই করতেন। আর, সেই মজা থেমে থাকল না এখানেই, তাঁকে বিবস্ত্র করে সে ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে মজা লুটলেন অপরিণত কয়েক জন কিশোর যুবা।
কৃষ্ণনগরের ওই ঘটনায়, বৃহস্পতিবার রাতেই অভিযুক্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে দু’জন স্কুল পড়ুয়া। অন্য জন এক মোবাইল বিক্রেতা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নাকাশিপাড়ার চিঁচুরিয়ার বাসিন্দা বছর পয়তাল্লিশের মানুষটাকে দেখলেই গ্রামের অনেকেই তাঁকে বিরক্ত করতেন। দিন কয়েক আগে, তেমনই করতে গিয়ে মাত্রা ছাড়াল। মানুষটার পোশাক খুলে নিয়ে তার অসহায় চেহারার ছবি মোবাইলে তুলে ছড়িয়ে দিয়েছিল তিন কিশোর।
সেই ছবি প্রতিবেশীদের মোবাইলে দেখতে পেয়ে ওই ব্যক্তির পরিবারের লোকজন বৃহস্পতিবার রাতে নাকাশিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই তিন কিশোরকে গ্রেফতার করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে গ্রামেই মোবাইলের দোকান রফিক মন্ডলের সাহায্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করেছে তারা। পুলিশ সেই রফিক মন্ডলকেও গ্রেফতার করেছে।
প্রথামিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ১২ জুন বেলা এগারটা নাগাদ গ্রামেরই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন ওই মাঝবয়সী। কাছেই গাছ তলায় বসে গল্প করছিল চিঁচুরিয়া হাইস্কুলের নবম এবং অষ্টম শ্রেণির দুই ছাত্র আর স্থানীয় এক টোটো চালক। তাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে পাশের একটি শাল বাগানে নিয়ে গিয়ে জোর করে খুলে নেওয়া হয় তার পোশাক। তার পর, সেই ছবি ভিডিয়ো করে।
চিঁচুরিয়ার ওই ব্যাক্তির স্ত্রী অবশ্য বলছেন, “আমরা প্রথমে থানা পুলিশ করতে চাইনি। আমরা ছেলেগুলোর বাড়িতে গিয়েছিলেম। যাতে ওরা সকলের সামনে ক্ষমা চায়। কিন্তু আমাদের কথার কোন গুরুত্ব না দেওয়াতেই আমরা পুলিশকে জানিয়েছি।” ধৃত কিশোরদের পরিবারের লোকজন অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও কথা বলতে চাননি।