প্রতীকী ছবি।
বিস্তীর্ণ এলাকায় কোনও স্থায়ী শ্মশান নেই। বেলডাঙা, রেজিনগর, নওদা, হরিহরপাড়া ধারেকাছে কোনও বৈদ্যুতিন চুল্লিওয়ালা শ্মশান নেই। বেলডাঙার ভাগীরথীর তীরে অবশ্য একটা কাঠ-কয়লার শ্মশান রয়েছে। কিন্তু বছরের সিংহভাগ সময়েই তা বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রতি ভোটের আগেই ডান-বামের নেতারা প্রচারে এসে স্থায়ী শ্মশান বানিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিই দেন। কিন্তু বহু বছর ধরে কেউ কথা রাখেনি। মাস ছ’য়েক আগে অবশ্য পুরসভা শ্মশান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক গেরোয় তা আটকে যাচ্ছে।
অবশ্য এর আগে সাংসদ অধীর চৌধুরী বেলডাঙার কুমারপুর ঘাটে কাঠের চুল্লি ও শবযাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু ভাগীরথী নদী খাত থেকে সেটা অনেকটা দূরে। আবার বর্ষার সময় সেই পরিকাঠামো প্রতি বছরই জলে ডুবে যায়। তাতে সেটা ব্যবহার করা যায় না। বেলডাঙা স্থায়ী বৈদ্যুতিক চুল্লির দাবিতে সবর এলাকাবাসী। কুমারপুর শশ্মান ঘাটটি বেলডাঙা ১ ব্লকের সুজাপুর কুমারপর গ্রাম পঞ্চায়েতের অর্ন্তগত।
ফলে বেলডাঙা পুরসভা এগিয়ে আসে বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরিতে।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন সরকার ‘বৈতরনী’ প্রকল্পে বৈদ্যুতিন চুল্লি গড়ার সম্মতি দেয়। বিঘা খানেক জমির উপর চুল্লি তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয় কয়েক মাস আগে। গত মার্চে ওই সম্মতি মেলে। প্রায় আড়াই কোটি টাকা খরচ করে এই চুল্লি তৈরির জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর স্থানীয় পঞ্চায়েতের ‘নো অবজেকশেন সার্টিফিকেট’ চেয়ে পাঠায়। মার্চে সেই ‘এনওসি’ চেয়ে সুজাপুর কুমারপর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে লিখিত আবেদন করেছে পুরসভা। কিন্তু জুনের প্রথম সপ্তাহেও সেই ‘এনওসি’ মেলেনি। ফলে আটকে রয়েছে প্রকল্প।
পুরসভা সূত্রে এ বিষয়ে জানা গিয়েছে, কোনও কারণ না দেখিয়েই পঞ্চায়েত ‘এনওসি’ আটকে রেখেছে চার মাস ধরে। পুরপ্রধান তৃণমূলের ভরত ঝাওর বলেন, ‘‘বৈতরণী প্রকল্পে পুর ও নগরোন্নয়ন বিষয়ক দফতরের সবুজ সংকেত পেয়েছি। শ্মশান যেহেতু পঞ্চায়েত এলাকায় তাই দফতর পঞ্চায়েতের ‘এনওসি’ চেয়েছে। কিন্তু কয়েক মাস কাটলেও সেই কাগজ আমরা পাইনি। ফলে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’
বেলডাঙার শহরের মানুষের কথায়, ‘‘ওই পঞ্চায়েত ও পুরসভা—দুই জায়গাতেই তৃণমূল ক্ষমতাসীন রয়েছে। তবু পুরসভার কথা শুনছেই না পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। প্রশাসন কেন পঞ্চায়েতকে এই বিষয়ে সক্রিয় হতে নির্দেশ দিচ্ছে না, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না।’’ স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের মমতাজ বেগম বলেন, ‘‘ওই বিষয়ে বোর্ড মিটিং করেছি। একটু সমস্যা হচ্ছে। তাই বিলম্ব হচ্ছে। সমস্যা শীঘ্রই মিটে যাবে।’’