প্রতীকী ছবি
এক সোমবার সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাঁরা কিছু সংখ্যায় বাস নামিয়েছিলেন পথে। পরের সোমবার তা না-ও হতে পারে। গত এক সপ্তাহের অভিজ্ঞতায় ভগ্নমনোরথ জেলার সেই বাস মালিকেরা আপাতত কাল থেকে বাস না নামানোর পক্ষে। কারণ হিসাবে তাঁরা জানিয়েছেন, যাত্রী একেবারে অমিল। এ অবস্থায় বাস নামালে তাঁদেরই পথে বসতে হবে।
যেমন নবদ্বীপ বাসস্ট্যান্ড থেকে সবচেয়ে বেশি বাস চলে বর্ধমান জেলায়। টোল প্লাজায় বাসপিছু টাকা বাড়ানোর প্রতিবাদে বর্ধমান জেলার মালিকেরা বাস বন্ধ রেখেছেন। নবদ্বীপের তৃণমূল পরিচালিত বাস সমিতির ইউনিয়নের সম্পাদক সুজিত সরকার বলেন, "বর্ধমানে মালিকেরা আজ এ নিয়ে আলোচনায় বসবেন। সিদ্ধান্ত তার ওপর নির্ভর করছে।"
শনিবারে সকালেও করিমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে সাতটি বেসরকারি বাস কলকাতায় রওনা দিয়েছে। প্রতিটি বাসেই গড়ে কুড়ি জনের বেশি যাত্রী ছিলেন না। অন্য সময় করিমপুর থেকে কৃষ্ণনগর রুটে প্রতিদিন প্রায় দেড়শো বাস চলাচল করে। এ দিন মাত্র দশটি বাস ছিল এবং তার কোনওটিতে পাঁচ-ছয় জনের বেশি যাত্রীর দেখা মেলেনি। করিমপুরের এক বাস মালিক নিলয় মণ্ডল জানান, এক-একটি বাসে প্রতিদিন হাজার দেড়েক টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
পলাশিপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রায় ৬০ শতাংশ বাস পরিষেবা চালু হয়ে গেলেও সে ভাবে যাত্রী না-মেলায় সমস্যার সম্মুখীন বাস মালিক সমিতি। পলাশিপাড়া বাস মালিক সমিতির সম্পাদক দীপেন সরকার বলেন, “ট্রেন পরিষেবা চালু হলে তবে বাসের যাত্রী বাড়বে। সোমবার বাস পরিষেবা নিয়ে তাই দোলাচলে আছি।”
গত কয়েক দিন কোনও রকমে চলার পর শনিবার রানাঘাট বাসস্টান্ড থেকে কোনও বাস চলাচল করেনি। সেখানকার বাস মালিক সমিতির চেয়ারম্যান মদন দাস জানান, রাস্তায় আদৌ যাত্রী হচ্ছে না। বাস চালানো সম্ভব হচ্ছে না। কাল একটি বাস কলকাতায় যাবে। তবে চাকদহ বাসস্ট্যান্ড থেকে চাকদহ-বনগ্রাম রুটের ৮টি বাস চলাচল করেছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে যাত্রীর অভাবে ভর্তুকি দিয়ে বাস চালানো কতদিন সম্ভব সেটাই মালিকেরা বুঝতে পারছেন না।
এরই মধ্যে কৃষ্ণনগর থেকে ভিনজেলায় যাতায়াতের জন্য আটটি রুটে সরকারি বাস চালু হয়েছে শুক্রবার থেকে। দক্ষিনবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার এই আটটি বাস দুর্গাপুর-কৃষ্ণনগর (ভায়া বর্ধমান, সাতগাছিয়া), দুর্গাপুর-রানাঘাট, দুর্গাপুর শিকারপুর (ভায়া বর্ধমান, সাতগাছিয়া), বাঁকুড়া-কৃষ্ণনগর, পুরুলিয়া-কৃষ্ণনগর, দুর্গাপুর-শিকারপুর (ভায়া বোলপুর ও বহরমপুর), দুর্গাপুর-কৃষ্ণনগর (ভায়া বর্ধমান, কুসুমগ্রাম) ও বর্ধমান-কৃষ্ণনগর এই রুটে চলাচল করবে। এতে দুই বর্ধমানের পাশাপাশি বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূমের মতো জেলার সঙ্গে নদিয়ার যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।