TMC

বৈঠক স্থগিত, প্রশ্ন তৃণমূলেই

কেউ বলছেন নিয়ম ভেঙে সভা ডাকার কারণেই তা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। কারও মতে,  সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই দেখেই শেষ মুহূর্তে সভা স্থগিত করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২০ ০৫:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

নিজেরই ডাকা সভা স্থগিত করলেন সভাপতি। ততক্ষণে ব্লক অফিসে এসে পড়েছেন বহু পঞ্চায়েত সদস্য। ব্লক অফিসকে ঘিরে পুলিশও। ফলে রাজনৈতিক উত্তাপের পারদ চরমে তুলেও নিজেই চুপসে দিলেন পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি বেরাজুল ইসলাম।

Advertisement

কেউ বলছেন নিয়ম ভেঙে সভা ডাকার কারণেই তা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। কারও মতে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই দেখেই শেষ মুহূর্তে সভা স্থগিত করেছেন। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হল।

তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নুরজামাল শেখ অবশ্য বলছেন, “দলের সঙ্গে ওদের সম্পর্কই তো নেই। দল চালাই আমরা। ওরা দলের দয়ায় পঞ্চায়েতে পাশ করেছেন। একটা দিনের জন্যও পঞ্চায়েতের কেউই দলের জন্য কোনও কাজ করতে দেখিনি। এঁদের দলে থাকা না থাকা সমান। এদের জন্য দলের লাভ বা লোকসান কিছুই নেই। তাই সাগরদিঘির পঞ্চায়েতের কোনও বিষয় আমরা জানিও না, মাথাও ঘামাই না। সাগরদিঘির মানুষ এটা জানান।”

Advertisement

বিডিও’র বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েত সমিতির সাধারণ সভা ডেকেছিলেন সভাপতি বেরাজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার। তা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই রাজনৈতিক আলোচনা উত্তাপ বাড়ছিল সাগরদিঘিতে। বৃহস্পতিবার সভা শুরুর মাত্র আধ ঘণ্টা আগে সভা স্থগিত করে দেন বেরাজুল। তাতে শাসক দলের পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে বিডিও-র সম্মুখ সমর এড়ানো গেলেও কার্যত দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেল সাগরদিঘির তৃণমূলের দখলে থাকা সমস্ত পঞ্চায়েত। সভাপতি বেরাজুল ইসলামের অবশ্য দাবি, তাঁর সঙ্গে এদিন ছিলেন অন্তত ২৪ জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য।

অন্যদিকে সাগরদিঘির ১১ জন পঞ্চায়েত প্রধান ও ৮ জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যকে নিয়ে এদিন বিডিও-র ঘরে ঢোকেন তৃণমূলের বোখারা ২ পঞ্চায়েতের প্রধান মনিরুজ্জামান দীপু। তিনি বলেন, ‘‘বিডিও-র বিরুদ্ধে যে ১১ দফা অভিযোগ ছিল তার উত্তর দিয়েছেন বিডিও। আমরা তাতে সন্তুষ্ট।’’

কি ছিল বিডিও’র বিরুদ্ধে অভিযোগ ?

পঞ্চায়েত সমিতির অভিযোগ, ব্লক অফিসে সুইমিং পুল বানানো, অফিসের প্রকল্পে ৩.৯৩ কোটি টাকা তছরুপ, অফিসের কর্মী ছাঁটাই, ১ কোটি টাকা খরচ করে বাসভবন ও ব্লক অফিস সংস্কারের নামে অর্থ তছরুপ, ব্লক অফিসের একটি জিপগাড়ি টেন্ডার না করে বিক্রি। এ ছাড়াও, অভিযোগ, ৪২টি ঢালাই রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল প্রতিটি রাস্তার জন্য ২৩ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা করে ব্যয় করে। অথচ তাতে খরচ করা হয়েছে মাত্র ৫০ শতাংশ টাকা।

এদিন ১১ দফা অভিযোগের জবাব দিয়েছেন প্রধানদের কাছে বিডিও। বলা হয়েছে, ব্লক অফিসে কোন সুইমিং পুল নেই। একটি ছোট মাঠপুকুরকে একশো দিনের প্রকল্পে অনুমোদন নিয়ে কাটানো হয়েছে মাত্র। ৩.৯৩ কোটি টাকা গরমিলের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। অডিটে পরীক্ষিত হিসেবে প্রশ্ন ওঠেনি কোথাও। বাসভবন ও অফিস দশ বছর কোনও সংস্কার হয়নি। পূর্ত স্থায়ী সমিতির অনুমোদন নিয়েই মাত্র ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে তাতে। একটি জিপগাড়ি কোটেশনের মাধ্যমে তা বিক্রি করা হয়েছে।

বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডু বলেন, “পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যরা এসেছিলেন। আমি তাঁদের আমার বক্তব্য জানিয়েছি। সভা নিয়ে কোন কথা বলব না আমি। যাঁরা ডেকেছিলেন তাঁরাই বলতে পারবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement