বৈশাখের প্রথম ঝড়েই এলোমেলো চাষাবাদ

বিঘা চারেক জমিতে কলাচাষ করেছিলেন করিমপুরের মধুগাড়ির মফিজুল মণ্ডল। কাঁদিও ধরতেও শুরু করেছিল। মাস দেড়েকের মধ্যে তা বিক্রি করার উপযুক্ত হত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৬
Share:

কবলে: ঝড়ে নুয়ে পড়েছে ধান। নিজস্ব চিত্র

বিঘা চারেক জমিতে কলাচাষ করেছিলেন করিমপুরের মধুগাড়ির মফিজুল মণ্ডল। কাঁদিও ধরতেও শুরু করেছিল। মাস দেড়েকের মধ্যে তা বিক্রি করার উপযুক্ত হত। রবিবার সন্ধ্যার ঝড়ে জমির বেশির ভাগ কলা গাছ ভেঙে পড়েছে। বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছেন মফিজুল। তাঁর কথায়, ‘‘দোকান থেকে ধার করে সার কিনে কলাচাষ করেছিলাম। কিন্তু এক ঝড়ে সব শেষ হয়ে গেল।” মফিজুল একা নন, রবিবারের ঝড়ে তাঁর মতো জেলার বহু কলা, পেঁপে ও বোরো ধান চাষি চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

Advertisement

হোগলবেড়িয়ার কাছারিপাড়ার কলাচাষি সঞ্জিত মণ্ডলের বিঘা দেড়েক জমিতে কলা ছিল। তিনি বলছেন, ‘‘সব গাছ ভেঙে মাটিতে পড়ে গিয়েছে। অনেক কলা কচি থাকায় বিক্রি করা যাচ্ছে না। ওই সব কলার কাঁদি ফেলে দিতে হচ্ছে। যেগুলো বিক্রি করার মতো তা ৫০-৬০ টাকায় বিকোচ্ছে। অথচ ক’দিন আগেই সেই কাঁদি ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।’’

কৃষ্ণগঞ্জের শিবনিবাসের পেঁপে চাষি মজনু শেখ এক বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করেছিলেন। মজনু বলছেন, “ধার করে আমি পেঁপে চাষ করেছিলাম। কিন্তু ঝড়েই সব শেষ করে দিল। এখন কী করব বুঝতে পারছি না।” নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “জেলার ঘরবাড়ি, ফসলের ক্ষতির প্রাথমিক রিপোর্ট রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।”

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার ২৯২টি মৌজা এলাকায় ঝড়বৃষ্টির জেরে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাগিচা ফসল, ধান ও সব্জি মিলিয়ে জেলায় প্রায় চার হাজার হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উদ্যান পালন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ১৭০০ হেক্টর কলা চাষে ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৪০০ হেক্টর পেঁপে চাষের ক্ষতি হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা। প্রায় ২৫০হেক্টর পান চাষের ক্ষতি হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ১৬ লক্ষ টাকা। তাছাড়াও প্রায় দুহাজার হেক্টর জমির বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে।

উদ্যান পালন বিভাগের জেলা আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঘোড়াই বলেন, ‘‘সব থেকে কলা চাষে বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী জেলাতে প্রায় ১১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকার কলার ক্ষতি হয়েছে। তার পরেই রয়েছে পেঁপে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement