Arrest

পড়ুয়া খুনে ধৃত তিন বন্ধু

এক জন নাবালক এবং নবম শ্রেণির ছাত্র। বাকি দু’জন জয়ন্তর সহপাঠী। তারা হল যথাক্রমে রানা বিশ্বাস ও দেবাঞ্জন ঘোষ। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

তেহট্ট শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৩৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র জয়ন্ত হালদারের খুনের ঘটনায় তার তিন বন্ধুকে বুধবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে এক জন নাবালক এবং নবম শ্রেণির ছাত্র। বাকি দু’জন জয়ন্তর সহপাঠী। তারা হল যথাক্রমে রানা বিশ্বাস ও দেবাঞ্জন ঘোষ।

Advertisement

বুধবার রাতে মোট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নিহত ছাত্রের বাবা। তার ভিত্তিতে ওই দিন রাতেই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার নাবালক ছাত্রকে কৃষ্ণনগর জুভেনাইল জাস্টিস কোর্টে ও বাকি দু’জনকে তেহট্ট মহকুমা আদালতে তোলা হয়। নাবালক অভিযুক্তকে এর পর একটি হোমে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুই যুবককে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এরা ছাড়াও যে ছাত্রীর সঙ্গে জয়ন্তের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানা গিয়েছে তার বিরুদ্ধে এবং তার মায়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা আপাতত পলাতক।

গত সোমবার সন্ধ্যায় তেহট্ট থানার বেতাই ছানাতলায় এক বন্ধুর বাড়িতে বেতাই উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র জয়ন্তের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশের অনুমান, প্রেমঘটিত বিবাদই এই খুনের কারণ। আবার জয়ন্তের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল এগারোটা নাগাদ বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সে। বিকেল ৪টের সময় শেষ বারের মতো সে পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলে। এর পরে সন্ধ্যায় তার মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছয়।

Advertisement

পুলিশ ও পরিবার সূত্রের খবর, নাজিরপুর সারদা বালিকা বিদ্যালয়ের এক নবম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে জয়ন্তের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। কিন্তু মেয়েটির পরিবার এই সম্পর্ক মানতে চায়নি। তাদের বাড়ি এসে মেয়েটির মা কিছুদিন আগে শাসিয়ে এসেছিলেন বলে অভিযোগ। সোমবার তেহট্ট-১ ব্লক অফিস থেকে ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের সাইকেল বিতরণ হচ্ছিল। সেখানে ওই মেয়েটিও এসেছিল। মেয়েটির সঙ্গে সেখানে জয়ন্ত ও তার তিন বন্ধু দেখা করে। কিছু ক্ষণ গল্প করে তারা বের হয়। হাউলিয়া পার্ক মোড়ে গিয়ে জয়ন্তের সঙ্গে মেয়েটির ঝগড়া শুরু হয় বলে পুলিশকে জানিয়েছে ধৃতেরা। তাদের দাবি, জয়ন্ত মেয়েটির মোবাইল কেড়ে নিয়ে মাটিতে আছাড় মেরে ভেঙে ফেলে। তখন রাগ করে মেয়েটি অটোতে উঠে চলে যায়।

চার বন্ধু এর পর বেতাই ছানাতলায় এক বন্ধুর বাড়ি যায়। সেখানে অন্য কেউ ছিল না। বিকেল চারটে নাগাদ একে একে অভিযুক্ত তিন যুবক চলে যায়। বাড়িতে থেকে যায় একা জয়ন্ত। বেশ কিছুক্ষণ পর এক বন্ধু এসে তাকে ডাকাডাকি করে। কিন্তু সাড়া পায় না। তখন ঘরে ঢুকে দেখে, জয়ন্ত নিস্তেজ হয়ে পড়ে রয়েছে। সে ভয় পেয়ে গিয়ে বাকিদের ডাকে। টোটোতে করে তারা জয়ন্তকে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক জয়ন্তকে পরীক্ষা করে জানান, তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

জয়ন্তের বাবা জয়দেব হালদারের অভিযোগ, আমার ছেলেকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।’’ অভিযুক্তেরা অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সারদা বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি প্রদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘ওই মেয়েটির নামে এর আগেও বেশ কয়েক বার বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ এসেছে, ওই মেয়েটির জন্য স্কুলের ভাবমূর্তি বারবার নষ্ট হচ্ছে। তাই স্কুলের পরিচালনমণ্ডলীর বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে ওই ছাত্রীর বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement