কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। — ফাইল চিত্র।
উপাচার্য না থাকায় বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে এই আশঙ্কায় কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে ঘেরাও করে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূলপন্থী শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা ও তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি।বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন হয়ে রয়েছে শনিবার রাত থেকেই। ওই দিনই ‘অস্থায়ী’ উপাচার্য মানসকুমার সান্যালের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ওই রাতেই তিনি নিজের বিভাগে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজভবন থেকে কোনও নির্দেশ আসেনি বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিকে মাস প্রায় শেষের মুখে। ফলে সময়ের মধ্যে বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ওয়েবকুপা-র কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সম্পাদক সুজয়কুমার মণ্ডল বলেন, “বেতন-সহ কয়েকটা বিষয় নিয়ে আমরা সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছি।” যদিও সংগঠনের সভাপতি নন্দকুমার ঘোষের দাবি, “ঘেরাও নয়, কয়েকটা বিষয় নিয়ে আমরা রেজিস্ট্রারের সঙ্গে আলোচনা করেছি।”
তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি ইউনিটের সভাপতি অঞ্জন দত্তকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, কিছু তৃণমূলপন্থী শিক্ষক ঘেরাও-বিক্ষোভের বিষয়টি চেপে যেতে চাইছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রতি মাসে ২৫ তারিখের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। বিল থেকে চেকে সই করেন উপাচার্য। উপাচার্য না থাকায় এখনও সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। বেতন হওয়ার কথা আগামী ৩১ তারিখ অর্থাৎ বুধবার। সেই কারণেই অনেকে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
এ দিন বিক্ষোভে বেতন সমস্যা ছাড়াও পিএইচডি-র পরীক্ষা, দূরশিক্ষা কেন্দ্রের অতিথি শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ও তোলা হয়। ওয়াবকুপা-র অভিযোগ, কোনও বিজ্ঞাপন ছাড়াই গত ২৫ মে দূরশিক্ষায় অতিথি শিক্ষক হিসাবে এক জনের নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এন বোস ইনোভেশন সেন্টারের অফিস কো-অর্ডিনেটর ছিলেন। বিক্ষোভের জেরে এ দিন সেই নিয়োগের নির্দেশ স্থগিত করা হয়েছে বলে সংগঠনের নেতাদের দাবি। তবে শিক্ষক ও আধিকারিকদের একাংশের দাবি, ওই অফিস কো-অর্ডিনেটরকে অভিজ্ঞতা তৈরির জন্য বিনা পারিশ্রমিকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
ওয়েবকুপা-র আরও অভিযোগ, প্রায় ছ’মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি-র গবেষক ভর্তি নেওয়ার পরীক্ষা হচ্ছে না। বিজ্ঞাপন হয়ে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক জানান, বিক্ষোভের মধ্যেই প্রশ্ন ওঠে, মানসকুমার সান্যাল কেন এখনও উপাচার্যের বাংলোয় রয়েছেন। একাধিক বার চেষ্টা করেও মানসকুমারকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
ওয়েবকুপা সূত্রের খবর, এ দিন বিকালে উচ্চ শিক্ষা দফতরের নির্দেশে রেজিস্ট্রারের দফতরে সহ-উপাচার্য গৌতম পালের সভাপতিত্বে আধিকারিকদের নিয়ে বেতনের বিষয়ে অনলাইন বৈঠক হয়।
সহ-উপাচার্য বলেন, “আমরা বৈঠক করে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তা অনুমোদনের জন্য উচ্চ শিক্ষা দফতরে পাঠানো হচ্ছে। আশা করছি বেতন বা পেনশনের মতো বিষয়গুলির ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে না।”