সুতপা চৌধুরী ও সুশান্ত চৌধুরী
বহরমপুরে কলেজছাত্রী সুতপা চৌধুরী খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হল সোমবার। ঘটনার চার মাস পাঁচ দিন পর চার্জ গঠন করলেন বহরমপুর জেলা দায়রা আদালতের বিচারক সৌমেন্দ্রনাথ দাস। সুশান্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুন এবং অস্ত্র আইনের ২৮ (বি) ধারায় অভিযোগ এনে শুরু হল বিচারপ্রক্রিয়া। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন বিচারক।
সুতপা খুনের ঘটনার ৭৪ দিন পর গত ১৫ জুলাই আদালতে মোট ৩৮৩ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছিল বহরমপুর থানার পুলিশ। মোট ৫৪ জনকে সাক্ষী হিসাবে দেখানো হয় ওই চার্জশিটে। অভিযুক্ত এক জনই— সুশান্ত। এই মামলায় বিশেষ সরকারি আইনজীবী বিভাসকুমার চট্টোপাধ্যায় জানান, বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, প্রথম শুনানিতে সাক্ষ্য দেবেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক। ওই কৌঁসুলি আরও বলেন, ‘‘এই প্রথম বার বাংলায় ড্রোনের সাহায্যে ঘটনাস্থলের ছবি তোলা হয়েছে।’’
অন্য দিকে, চার্জ গঠনের দিনেও পুলিশি তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন সুশান্তের আইনজীবী পীযূষ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আমার মক্কেল সুশান্ত চৌধুরীর হয়ে আদালতে সওয়াল করব। পুলিশি তদন্তে ইচ্ছাকৃত গাফিলতি আছে। আগামী দিনে আরও বেশ কিছু তথ্য আদালতে পেশ করা হবে।’’
এই মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী আরিফুজ্জমান। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আদালতের কাছে আসামির কাস্টডিয়াল ট্রায়াল (হেফাজতে রেখে বিচারপ্রক্রিয়া)-এর আবেদন করেছিলাম। আদালত সেই দাবি মঞ্জুর করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করেছে। দ্রুত খুনিকে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট আশাবাদী।’’
প্রসঙ্গত, গত ২ মে ভরসন্ধ্যায় বহরমপুরের কাক্যায়নীর গলিতে বহরমপুর গার্লস কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপাকে তাঁর মেসের সামনের রাস্তাতে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুন করে সুশান্ত। ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শমসেরগঞ্জের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে সুশান্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় সুশান্ত স্বীকারও করে নেয়, পরিকল্পনামাফিক সে-ই সুতপাকে খুন করেছে। সেই মামলারই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে।