—প্রতীকী চিত্র।
নকল করতে বাধা দেওয়ায় পরীক্ষা হলে নজরদারিতে থাকা তিন শিক্ষককে রাস্তায় ফেলে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি মারার অভিযোগ উঠল কয়েক জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বুধবার নদিয়ার চাপড়ার দৈয়েরবাজার বিদ্যামন্দির হাই স্কুলের ঘটনা। বাকিরা পালিয়ে গেলেও স্থানীয় বাসিন্দারা তিন পরীক্ষার্থীকে ধরে ফেলেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই তিন জনকে চাপড়া থানায় নিয়ে যায়। অবশ্য কোনও অভিযোগ না-হওয়ায় তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তাদের সতর্কও করা হয়।
বিদ্যালয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাটচাপড়া কিং এডওয়ার্ড হাই স্কুল, পুখুরিয়া হাই স্কুল ও বহিরগাছি-বাগমারা হাই স্কুলের পড়ুয়াদের পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছে চাপড়ার দৈয়েরবাজার বিদ্যামন্দির হাই স্কুলে। দৈয়েরবাজার বিদ্যামন্দিরের শিক্ষকদের দাবি, পরীক্ষার প্রথম দিন থেকেই হাটচাপড়া কিং এডওয়ার্ড হাই স্কুল কয়েক জন পরীক্ষার্থী টুকলি দেখে পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। নজরদারিতে থাকা শিক্ষকেরা বাধা দিলে তারা একাধিকবার অশান্তি করে। তবে সে ভাবে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বুধবার ছিল রাষ্টবিজ্ঞান পরীক্ষা। এ দিনই তাদের শেষ পরীক্ষা ছিল। অভিযোগ, পরীক্ষার শুরু থেকেই ওই পরীক্ষার্থীরা নকলের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাতে থাকে। শিক্ষকেরা বাধা দিলে তারা কার্যত রুদ্রমূর্তি ধারণ করে। শিক্ষকদের হুমকি দিয়ে হলের মধ্যেই অশান্তি শুরু করে। তবে শিক্ষকেরা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় তারা পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই খাতা জমা দিয়ে বেরিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক জন পরীক্ষার্থী রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল। তিন জন শিক্ষক বিদ্যালয় চত্বর ছাড়িয়ে রাস্তায় উঠতে না উঠতেই ওই পরীক্ষার্থীরা তাঁদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী ছুটে গিয়ে তিন জন পরীক্ষার্থীকে ধরে ফেলে। বাকিরা পালিয়ে যায়। তিন জনকে স্কুলের ভেতরে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
দৈয়েরবাজার বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক শান্তনু বিশ্বাস বলেন, “গন্ডগোলের খবর পেয়ে আমি ওই পরীক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করি। তবুও তারা শান্ত না-হওয়ায় বাধ্য হয়ে আমি হাটচাপড়া কিং এডওয়ার্ড হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ফোন করি। তিনি এক জন শিক্ষককেও পাঠান।” তাঁর কথায়, “পরীক্ষা মিটে যাওয়ার পর দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ আমাদের স্কুলের তিন জন শিক্ষক স্কুল চৌহদ্দি ছাড়ালেই তাঁদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মারধর শুরু করে ওই পরীক্ষার্থীরা।”
মোবাইল ফোনে একাধিকবার হাটচাপড়া কিং এডওয়ার্ড হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি ধরেননি। তাই তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উচ্চ মাধ্যমিক পর্ষদের নদিয়া জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক দিলীপ সিংহ বলেন,“আমরা গোটা বিষয়টি পর্ষদকে জানিয়েছি। পর্ষদ নিশ্চয়ই যথাযথ পদক্ষেপ করবে।”