শিক্ষক মিনারুল শেখ। নিজস্ব চিত্র
প্রিয় স্যরকে কিছুতেই তারা যেতে দেবে না। চোখের জলে ভেসে তাই তাঁর পথ আগলে দাঁড়াল ছাত্ররা। মরিয়া হয়ে স্কুলের গেটের সামনে একজোট হয়ে তারা স্লোগান তুলল।
সোমবার যখন পলাশিপাড়ার হাঁসপুকুর বিদ্যাপীঠে এই সব হচ্ছে ঘটনাচক্রে তার পর দিন অর্থাৎ মঙ্গলবারই পড়েছে গুরুপূর্ণিমা। গুরুকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর বিশেষ দিন। এ দিনও অধীর আগ্রহে ছাত্ররা অপেক্ষা করেছে স্যর মিনারুল শেখের মত বদলের জন্য। উত্তর অবশ্য এখনও আসেনি। তবে তারা হাল ছাড়েনি। কারণ, স্যর তাদের কথা দিয়েছে, কয়েক দিন ভেবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। ছাত্রদের কাঁদতে দেখে সোমবার তিনি নিজেও চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। কেঁদে ফেলেছিলেন।
মিনারুল শেখ হাঁসপুকুর বিদ্যাপীঠের গণিতের শিক্ষক। মিনারুল থাকেন তেহট্টতে। ২০০২ সালে গণিতের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এই বিদ্যালয়ে। কিছু দিনের মধ্যেই ছাত্রদের প্রিয় হয়ে ওঠেন মিনারুল। অঙ্ককে ভালবাসতে শিখিয়েছেন ছাত্রদের। অঙ্ক মাথায় না ঢুকলে যত্ন নিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন। গরিব পড়ুয়াদের আলাদা ভাবে পড়াতেন স্কুলেই। পড়াশোনার পাশাপাশি মিনারুল পড়ুয়াদের সঙ্গে খেলাধুলা, নাটকের বিষয় আলোচন করতেন। এই ভাবে ক্রমশ মিনারুল এর সঙ্গে পড়ুয়াদের ভালবাসার সম্পর্ক তৈরী হয়।
সম্প্রতি তাঁর বদলির নির্দেশ এসেছে সিদ্ধেশ্বরীতলা ইন্সটিটিউশনে। সোমবার তা জানতে পেরে পড়ুয়ারা বিদ্যালয়ের সামনে জমায়েত হয়। তাদের একটাই দাবি, প্রিয় শিক্ষককে এই বিদ্যালয় ছেড়ে যেতে দেওয়া হবে না।‘ কাঁদতে কাঁদতে ছাত্ররা বলে, ‘‘ স্যার আপনাকে যেতে দেব না, স্যার আপনি যাবেন না।’’
মিনারুল বলেন, ‘‘আমি আশা করেছিলাম এই বিদ্যালয়েই প্রধান শিক্ষক হিসেবে আসবো। কিন্তু প্রধান শিক্ষক হিসাবে আমার বদলি হয় সিদ্ধেশ্বরীতলায়। এই খবর ছাত্ররা পেয়ে হতাশ হয়ে ওঠে। আমারও খুব মন খারাপ হচ্ছে ওদের ছেড়ে যেতে। দেখছি কি করা যায়। একটু সময় চেয়েছি।’’