ছাত্রদের উদ্যোগেই বুক ব্যাঙ্ক দুঃস্থ-মেধাবী পড়ুয়াদের জন্য

অনেক মেধাবী পড়ুয়াই বাড়ির অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে পাঠ্য পুস্তক বা বিভিন্ন বিষয়ের সহায়ক বই কিনতে পারেন না। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এ বার শান্তিপুরে চালু হল বুক ব্যাঙ্ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৮:০০
Share:

সংস্থার উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে বুক ব্যাঙ্ক। নিজস্ব চিত্র

ভবঘুরে এবং দুঃস্থদের জন্য আগেই তৈরি হয়েছিল ফুড ব্যাঙ্ক এবং জামা-কাপড়ের ব্যাঙ্ক। এবার মেধাবী দুঃস্থ পড়ুয়াদের জন্য তৈরি হল বুক ব্যাঙ্ক। শান্তিপুরের সংস্থা নবজাগরণের উদ্যোগে এবং একটি মানবাধিকার সংস্থার সহায়তায় বৃহস্পতিবার থেকে পথচলা শুরু করল এই বুক ব্যাঙ্ক।

Advertisement

অনেক মেধাবী পড়ুয়াই বাড়ির অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে পাঠ্য পুস্তক বা বিভিন্ন বিষয়ের সহায়ক বই কিনতে পারেন না। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এ বার শান্তিপুরে চালু হল বুক ব্যাঙ্ক। শান্তিপুর থানার মোড়ে একটি সংস্থার দফতরে প্রাথমিক ভাবে এর জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক থেকে শুরু করে স্নাতক, স্নাতকোত্তর স্তরের বিভিন্ন পাঠ্য বই এবং সহায়ক বই এখানে রাখা হবে।

এর জন্য আগে থেকেই এলাকার মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছিল শান্তিপুরের এই সংস্থাটি। সামাজিক মাধ্যমে এবং এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে প্রচার করা হয়েছিল, যেন তাঁরা বাড়িতে পড়ে থাকা নানান পাঠ্য বই, ডিকশনারি, টেস্ট পেপার, বিভিন্ন বিষয়ের সহায়ক বই ওই সব দুঃস্থ পড়ুয়ার সাহায্যে দান করেন। সেই মর্মে আবেদনও জানানো হয়।

Advertisement

জানা গিয়েছে, ওই আবেদনে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু মানুষ তাঁদের বই তুলে দিয়েছেন এই বুক ব্যাঙ্কে।

সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রনাপ্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, “অনেকেই অব্যবহৃত বই হয়তো ফেলে দেওয়ার বা বিক্রি করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছিলেন। তাঁদের কাছে অনুরোধ করেছিলাম। অনেকেই সাড়া দিয়েছেন।’’ তিনি জানান, এই বই তাঁরা দুঃস্থ মেধাবী পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দেবেন।

তিন বছর আগে শান্তিপুরের জনাতিনেক যুবক মিলে ওই সংস্থাটি গড়ে তোলেন। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ২২। যার বেশির ভাগই কলেজ বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া। এর আগে তাঁরা চালু করেছেন একটি ফুড ব্যাঙ্কও। যার মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে বেঁচে যাওয়া খাবার সংগ্রহ করে নিয়ে এসে ভবঘুরে বা দুঃস্থদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এই কাজে সুবিধার জন্য তাঁরা একটি রেফ্রিজারেটরও কিনেছেন। রাত্রিবেলা অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে নিয়ে আসা খাবার সঞ্চিত থাকে সেখানে। সকালে তা গরম করে পৌঁছে দেওয়া হয় দুঃস্থদের কাছে। এ ছাড়াও শান্তিপুর ডাকঘর বাসস্ট্যান্ডে সংস্থার উদ্যোগে একটি বাক্স রাখা হয়েছে। সেখানে বহু মানুষ বাড়ির পুরনো জামা-কাপড়, বাচ্চাদের খেলনা, জুতো ইত্যাদি জমা করে যান। পরে সেগুলি পৌছে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায় দুঃস্থদের প্রয়োজনে।

সংস্থার সদস্য সুব্রত মৈত্র, সৌম্যজিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের হাতখরচের টাকা বাঁচিয়ে আমরা সংস্থার ভান্ডারে নিয়মিত টাকা জমা করি। সেই টাকা থেকেই আমরা অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর কাজ করে থাকি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement