জলমগ্ন মাদ্রাসা, শিকেয় পড়াশোনা

প্রস্তাবিত রাস্তার দৈর্ঘ্য বড় জোর ১০০ মিটার। ওইটুকু রাস্তা তৈরির জন্য বছর আড়াই বছর ধরে বহু আবেদন-নিবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে বর্ষা এলে কয়েক বছর ধরে জলবন্দি হয়ে পড়ছে লালগোলার মৌলানা মুমতাজুদ্দিন জুনিয়র মাদ্রাসা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লালগোলা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৫ ০১:১৫
Share:

এ ভাবেই জলে ডুবে রয়েছে মাদ্রাসা চত্বর। —নিজস্ব চিত্র।

প্রস্তাবিত রাস্তার দৈর্ঘ্য বড় জোর ১০০ মিটার। ওইটুকু রাস্তা তৈরির জন্য বছর আড়াই বছর ধরে বহু আবেদন-নিবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে বর্ষা এলে কয়েক বছর ধরে জলবন্দি হয়ে পড়ছে লালগোলার মৌলানা মুমতাজুদ্দিন জুনিয়র মাদ্রাসা। সম্প্রতি কয়েক দিনের বৃষ্টিতে মাদ্রাসা লাগোয়া চত্বরে জল কোমর ছুঁয়েছে। জলের তলায় চলে গিয়েছে মাদ্রাসায় যাওয়ার রাস্তা। তাই গত ১ জুলাই থেকে বন্ধ লালগোলার ওই মাদ্রাসার পঠনপাঠন।

Advertisement

লালগোলা স্টেশন থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে গাবতলা ও বৈরবোনা গ্রামের মাঝমাঝি এলাকায় অবস্থিত মাদ্রাসাটি। এক সময় জমি ও বাড়ি না থাকায় লালগোলার রহমতুল্লা হাইমাদ্রাসা ভবনে সকালে পঠনপাঠান চলত মৌলানা মুমতাজুদ্দিন জুনিয়র মাদ্রাসার। একদা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এখন ওই মাদ্রাসার শিক্ষক সহেল রাণা জানান, নিজস্ব জমি ছাড়া ভবন নির্মাণের জন্য সরকারি টাকা মিলছিল না। অবশেষে প্রয়াত মন্ত্রী আবুস সাত্তারের ভাগ্নে মহম্মদ জালালুদ্দিনের ৪ শতক ও ভাগ্নি সাবেরা খাতুনের দান করা ২০ শতক জমিতে গড়ে ওঠে ওই মাদ্রাসার দোতলা ভবন। ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে ওই ভবনে পঠনপাঠন শুরু হয়।

সহেল বলেন, ‘‘প্রায় মেঝে ছুঁইছুঁই জল। ছোটছোট ছেলেমেয়েরা বারান্দা থেকে জলে পড়ে গেলে বিপদ ঘটবে।’’ সেই বিপদের ভয়ে মাদ্রাসা ছেড়ে অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়ারা চলে যাচ্ছে। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘এ বছরের ছাত্রছাত্রী সংখ্যা কমে হয়েছে ৪১৮ জন। গত বারের তুলনায় শ’খানেক কম। রাস্তা আর জলের কারণে কমছে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা।’’ ফলে রাস্তার পাশাপাশি মাদ্রাসা চত্বরও মাটি ভরিয়ে উঁচু করা জরুরি।

Advertisement

গত বছরও একই ভাবে জলবন্দি হয়ে পড়েছিল মাদ্রাসাটি। প্রধান শিক্ষক আমিুরুল ইসলাম জানান, দৈর্ঘে ১০০ মিটার আর উচ্চতায় ২ মিটার একটি মাটির রাস্তা হলেই সমস্যা মিটে যায়। ওইটুকু রাস্তার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, বিডিও, জেলা সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর কোথাও যেতে বাকি নেই। কিন্তু আজও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

তিনি বলেন, ‘‘সবাই দায় ঝেড়ে ফেলতে ব্যস্ত। গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে এ বারের বর্ষার আগে রাস্তা করা জন্য মাস ছয়েক আগে বিডিওর কাছে আবেদন করেছিলাম। তিনি আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তা হল কই।’’

লালগোলার বিডিও স্বপ্নজিৎ সাহার অবশ্য সাফাই, ‘‘অর্থের অভাবে রাস্তাটি করা যায়নি। তবে সমস্যাটির সমাধানের চেষ্টা চলছে।’’ লালগোলা পঞ্চায়েত প্রধান অজয় ঘোষ বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজের প্রকল্প থেকে মাদ্রাসায় যাওয়ার উঁচু রাস্তা করার কথা ভাবা হয়েছিল। কাছাকাছি মাটি না পাওয়ায় এক কিলোমিটার দূর থেকে ট্রাক্টরে মাটি বয়ে আনতে হবে। কিন্তু বিডিও নিষেধ করায় তা করা যায়নি।’’

প্রত্যুত্তরে বিডিও বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মাথায় করে মাটি বইতে হবে। ট্রাক্টরে মাটি বয়ে আনা করা যাবে না। ফলে এ ক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত নিরূপায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement