আইআইএসইআর কলকাতা। —ফাইল চিত্র।
জাতীয় শিক্ষকের সম্মান পেলেন আইসারের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক সায়ম সেন গুপ্ত। এই বারই প্রথম উচ্চশিক্ষায় এই সম্মান দেওয়া হল। গোটা দেশে এই সম্মান প্রাপকদের তালিকায় ছিলেন ১৩ জন। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে সম্মানিত হন সায়ম।
শিক্ষকতার কাজে সায়ম যুক্ত হন আমেরিকায় পিট্সবার্গে কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার সময় থেকেই। ২০০৬ সালে পুণের জাতীয় রসায়ন গবেষণাগারে তাঁর কর্মজীবন শুরু। পরের বছর পুণের আইসারে শিক্ষকতা শুরু করেন। ২০১৬ সালে আইসার কলকাতায় রসায়ন শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। রসায়নের জটিল বিষয়গুলি ছাত্রছাত্রীদের সামনে সহজ করে তুলে ধরাই তাঁর শিক্ষকতার অন্যতম দিক। তাঁর গবেষণার কাজ মূলত জীবন বিজ্ঞান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন রাসায়নিক অনুঘটক তৈরি করা। রাসায়নিক তৈরি করতে গেলে প্রচুর উপাদান নষ্টের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ হয়। তাঁদের গবেষণাগারে তৈরি অনুঘটক উপাদান নষ্ট হওয়া পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ কমায়।
সায়ম জানান, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর কাজ তিনি আগেই শুরু করেছিলেন। পুণেতে থাকার সময়ে জাতীয় রসায়ন গবেষণাগার ও আইসারের দুই সহকর্মীর সঙ্গে ‘এক্সাইটিং সায়েন্স গ্রুপ’ খোলেন তিনি। প্রতি রবিবার বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিজ্ঞান আলোচনা হত। পুণের তিনটি পুরসভার স্কুলকে দত্তকও নেয় এই গ্ৰুপ। সেগুলিতে সপ্তাহে এক দিন বিজ্ঞান আলোচনা তথা সায়েন্স ক্লাবের আয়োজন করা হত। এই কাজের সঙ্গে ২০০৮ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যুক্ত ছিলেন তিনি।
২০১৯ সালে কল্যাণীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে মোহনপুর ক্যাম্পাসে রিসার্চ ইনোভেশন অ্যান্ড সায়েন্টিফিক অন্ত্রপ্রেনরশিপ ফাউন্ডেশন বা ‘রাইস ফাউন্ডেশন আইসার’ নামে একটি ‘ইনকিউবেশন সেন্টার’ চালু হয়। তার চার জন প্রতিষ্ঠাতা-অধিকর্তার মধ্যে সায়ম অন্যতম। তিনি বলেন, "এই ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য হল ছাত্রছাত্রীরা নিজেরা কর্মপ্রার্থী হবেন না, তাঁরা নিজেরাই উদ্যোগপতি হয়ে অন্যদের কর্মসংস্থান তৈরি করে দেবেন।" আসলে তিনি মনে-প্রাণে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের শিষ্য। সায়ম বলেন, "একশো বছর আগে প্রফুল্লচন্দ্র বলে গিয়েছেন, বিজ্ঞান ও শিল্প এক সঙ্গে না চললে উন্নতি হয় না। পশ্চিমের দেশগুলিতে এই সমন্বয় আছে বলেই ওদের এত উন্নতি।"
রাজ্য সরকারের তরফে মঙ্গলবার শিক্ষারত্ন সম্মান পান ফতেপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তুষারকান্তি নাথ ও কল্যাণী সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক প্রভাসকুমার রায়। দু'জনেই নদিয়া জেলাশাসকের দফতরে সম্মানিত হন।