শান্তিপুর কলেজে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং ছাত্রপরিষদ পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করল। কিন্তু, ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও পুলিশ কোনও পক্ষেরই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেনি। শান্তিপুরের পাশাপাশি বুধবার অশান্তি হয় মাজদিয়া কলেজেও।
বোমাবাজি এবং ছাত্র সংঘর্ষের জেরে বুধবার কলেজের পরিবেশ ছিল পুরোপুরি থমথমে। পরীক্ষা চলছে বলে পড়ুয়ারা কলেজে এলেও, তাঁদের চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। কলেজের পরিবেশ যেমনই হোক, দুই ছাত্র সংগঠন অবশ্য পরস্পরের বিরুদ্ধে তাল ঠুকেই চলেছে। থামার লক্ষণ নেই কোনও পক্ষেরই। পুলিশ সূত্রে খবর, এই অবস্থায় যে কোনও একটি পক্ষের অভিযুক্তদের গ্রেফতার করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়বে। সেই জন্য তারা আপাতত ধীরে চলো নীতি নিয়েছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার শান্তিপুর কলেজে সংগঠনের ইউনিট খোলে ছাত্রপরিষদ। আর এদিনই কলেজে ঢুকে বেধড়ক মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় সংগঠনের দুই নেতাকে। ঘটনায় অভিযুক্ত টিএমসিপি। এই ঘটনার পরেই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। কলেজে বোমাবাজির অভিযোগও উঠেছে। এক্ষেত্রে আবার অভিযোগের তির ছাত্র পরিষদের দিকে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে শান্তিপুরের ঘটনায় টিএমসিপির পক্ষ থেকে আহত বিটন বিশ্বাস সহ ৯ জন ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় বোমাবাজি ও মারধরের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আবার ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকেও কলেজের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক তথা টিএমসিপির শান্তিপুর শহর কমিটির সভাপতি মনোজ সরকার সহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ সুপার শিষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের কার কী ভূমিকা ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
বুধবার রাজ্য ছাত্র পরিষদের তরফে রানাঘাটের এসডিপিও ও জেলার পুলিশ সুপারের কাছে ডেপুটেশন দিয়ে আভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। সংগঠনের রাজ্য কমিটির সাধারন সম্পাদক অর্ঘ্য গন বলেন, ‘‘আমরা ৪৮ ঘন্টা সময় দিয়েছি পুলিশকে। তার মধ্যে যদি অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা হয়, তা হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাব।’’ টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অয়ন দত্ত বলেন, ‘‘আজ আমি শান্তিপুরে গিয়ে কলেজের ছেলেদের সঙ্গে কথা বলেছি। যে ভাবে কংগ্রেসের সমাজবিরোধীরা কলেজে বোমাবাজি করছে, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাতে আমাদের ছেলেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছে।’’ এই কলেজের অধ্যক্ষ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বুধবার কলেজে স্বাভাবিক কাজকর্মই হয়েছে। বহিরাগতদের কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।’’
অন্যদিকে বুধবার মাজদিয়ার সুধীরঞ্জন লাহিড়ী কলেজে ‘প্রাকটিক্যাল’ পরীক্ষার খাতা জমা দিতে গিয়ে বেধড়ক মার খেতে হল এক এসএফআই নেতাকে। তাঁকে সেই খাতা জমাও দিতে দেওয়া হয় নি বলে অভিযোগ। এ ক্ষেত্রেও অভিযোগ সেই টিএমসিপি-র বিরুদ্ধেই। বুধবার বিকেলে কৃষ্ণগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রহৃত ছাত্রটি।