—প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনে বিজেপির দোসরদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পথে এগোচ্ছে সিপিএম। কংগ্রেসের তরফে প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীও ঘোষণা করেছেন, যাঁরা বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে বোর্ড গড়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু নীরব শাসক দল তৃণমূল। বরং প্রায় প্রতিদিনই দল ছেড়ে যাওয়া নির্দল বা অন্য সদস্যদের দলে ফেরানো হচ্ছে।
দু’দিন আগেই তৃণমূলে টিকিট না পাওয়া মোরগ্রামের গোলক মালকে দলে ফিরিয়েছেন জঙ্গিপুরের দলের চেয়ারম্যান কানাই মণ্ডল ও সাগরদিঘির ব্লক সভাপতি সামশুল হোদা। গোলকের নিজের কথায়, “টিকিট দেয়নি দল। তাই নির্দল দাঁড়িয়ে জয়ী হই। তাই আবার দলে ফিরলাম।”
পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনে দলের হুইপ অমান্য, টিকিট না পেয়ে দল ছাড়া নির্দল ও অন্য দলের কর্মীদের ফের দলে ফিরিয়ে আনা, এমনকি বিজেপির সঙ্গে বোর্ড গঠন। জেলা জুড়ে এমন অভিযোগের পাহাড় জমেছে তৃণমূলে। দলের মধ্যে এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ কর্মী ও নেতাদের মধ্যে। ইতিমধ্যেই জেলা থেকে রাজ্য কমিটিতে পাঠানো হয়েছে এই সব বেনিয়মের তালিকাও। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষেত্রেই কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত তো দূরের কথা, এ নিয়ে টুঁ শব্দটিও করছেন না রাজ্য নেতারা।
যদিও এই সব ঘটনাকে ঘিরে একাধিক ব্লকে তৃণমূলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠেছে। বহু ব্লকে দুই শিবিরে ভাগ হয়ে গেছে দল। একদিকে ব্লক সভাপতি ও তাঁর অনুগতেরা। অন্য দিকে বিধায়ক ও তাঁর অনুগতেরা। আশঙ্কা বাড়ছে দলের মধ্যে।
মুর্শিদাবাদের দুই সাংগঠনিক জেলায় অন্তত ৬২টি পঞ্চায়েতে তৃণমূল বোর্ড গড়েছে দলীয় নিয়ম ভেঙে। অন্তত ৪০ জন দলে ফের ফিরেছেন যারা টিকিট না পেয়ে দল ছেড়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন নির্দল হয়ে বা অন্য দলের টিকিটে। তৃণমূলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে তাঁদের।
সবচেয়ে বেশি দলীয় হুইপ অমান্যের ঘটনা ঘটেছে সাগরদিঘিতে। অন্তত ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে রাজ্য কমিটির নির্দেশ অমান্য করে বোর্ড গঠন করেছে তৃণমূলের কিছু সদস্য। বহু ক্ষেত্রেই বিজেপির সরাসরি সমর্থন নেওয়া হয়েছে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ দলের বিধায়ক বাইরন বিশ্বাসও। একই ঘটনা ঘটেছে সুতিতে। এক বিধায়ককে হারাতে আর এক বিধায়ক বিজেপি ও কংগ্রেসের সদস্যদের সমর্থন নিয়েছেন বোর্ড গড়তে।
জঙ্গিপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘জেলা জুড়েই বোর্ড গড়তে অনিয়ম হয়েছে। আমরা সমস্তটাই জানিয়েছি রাজ্যের সভাপতি সুব্রত বক্সীকে। তাঁরাই যা করার করবেন।’’ খলিলুর বলেন, ‘‘ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার জেলা কমিটিকে দেওয়া হয়নি। তাই আমাদের কিছুই করার নেই।’’