—প্রতীকী চিত্র।
সশস্ত্র পুলিশের কড়া পাহারায় মঙ্গলবার তৃণমূলের জঙ্গিপুর জেলার সভা হল। সেখানে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা দাবি তুললেন, খলিলুর রহমানই লোকসভা ভোটে জঙ্গিপুরের প্রার্থী হোন। এমনকি, দলের রাজ্য সহ সভাপতি মইনুল হক বলেন, ‘‘জঙ্গিপুরে গত লোকসভা নির্বাচনে যিনি জয়ী হয়েছেন সেই খলিলুর রহমানই এ বারও প্রার্থী হচ্ছেন লোকসভায়।’’ খলিলুর অবশ্য বলেন, ‘‘ভালবাসা ও আবেগ থেকে হয়তো তিনি এই ঘোষণা করে ফেলেছেন। দলনেত্রী দলগত ভাবে যে দিন ঘোষণা করবেন সেটাকেই চূড়ান্ত বলে মানবেন দলের কর্মীরা।’’
জঙ্গিপুর জেলার ৯ জন দলীয় বিধায়কের মধ্যে এ দিনের সভায় হাজির ছিলেন না মন্ত্রী আখরুজ্জামান, সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস ও শমসেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল ইসলাম। খলিলুরের দাবি, আখরুজ্জামান সৌদি আরবে, আমিরুল কলকাতায় ও বাইরনের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান থাকায় তাঁরা সভায় হাজির থাকতে পারেননি।
সভায় মূলত ডাকা হয়েছিল প্রধান, উপপ্রধান, দলের ব্লক ও অঞ্চল সভাপতি, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সমস্ত সদস্য ও জেলা কমিটি সদস্যদের। খলিলুরের দাবি, ৯৫ শতাংশ সদস্যই এ দিনের সভায় হাজির ছিলেন। ঘন্টা আড়াই চলেছে এই সভা। রঘুনাথগঞ্জ রবীন্দ্রভবনের প্রধান ফটক তালাবন্ধ করে, রাইফেলধারী পুলিশের পাহারা বসিয়ে সভা হয়েছে। অনেক দলীয় কর্মী রবীন্দ্র ভবনের সামনে ভিড় করে থাকলেও ভিতরে ঢোকার অনুমতি পাননি।
এমনকি সাধারণ ভাবে যা কখনও ঘটে না তৃণমূলের সভায় এ দিন সেটাও ঘটেছে। সভা শুরুর আগে সাংবাদিকদের সভার ছবি তোলার পরপরই সভা ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়।
সভা শুরু হয় রাজ্য সরকারের সঙ্গীত “বাংলার মাটি…” দিয়ে। সভায় বিধায়ক ও জেলার দুই নেতা, সভাধিপতি ছাড়া কাউকেই বক্তব্য রাখতে দেওয়া হয়নি এ দিন। ফলে দলের কোথায় সাংগঠনিক অবস্থা কেমন, ভোটার তালিকা ইত্যাদি কোনও প্রসঙ্গই তোলার সুযোগ পাননি সভায়। দলের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সাগরদিঘি ও লালগোলায়।
সাগরদিঘির এক নেতার মতে, ‘‘ব্লক স্তরের নেতাদের কথা না শুনলে বিধানসভা নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি এড়ানো যাবে না লোকসভাতেও। আজকের সভায় সে সুযোগ মেলেনি।’’
দলের সাংগঠনিক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ‘‘সামনে লোকসভা নির্বাচন। কিভাবে কাজ করবেন সে দিকে লক্ষ্য রেখে কর্মীদের বার্তা দিতেই এই সভার আয়োজন। শুধু কিছু পদাধিকারী নেতাকে ডাকা হয়েছিল সভায়। এরপর প্রতিটি ব্লকে, বুথে বুথে সভা করবে তৃণমূল।’’
খলিলুর বলেন, ‘‘এই সভা থেকে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল বলা চলে। বুথ স্তরের কর্মীরা এখন থেকে বাড়ি বাড়ি যাবেন। সরকারি প্রকল্প থেকে এখনও যারা বাদ রয়েছেন, তাঁদের সে সুবিধে পাইয়ে দিতে চেষ্টা করবেন। দলে কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই। বড় দল বলে কিছু মতান্তর হয়, মিটেও যায়।’’