জখম নির্দল প্রার্থী হেমন্ত বাগদী। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটে ‘দেওয়াল দখল’কে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে। দেওয়াল লিখন নিয়ে বচসা গড়াল হাতাহাতিতে। তৃণমূল এবং নির্দলদের মারামারিতে কপাল ফাটল নির্দল প্রার্থীর। আক্রান্তের দাবি, তিনি ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের অনুগামী। এবং তাঁকে মারধর করেছেন তৃণমূলের লোকেরা। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার দুপুরে ভরতপুরের জজান এলাকায় দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় তৃণমূল এবং নির্দলপন্থীরা। তাতে জখম হন জজান গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০৮ নম্বর বুথের নির্দল প্রার্থী হেমন্ত বাগদী। চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কান্দি মহকুমা হাসপাতালে। তাঁর দাবি, তিনি তৃণমূল করতেন। দলের তরফে টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। এবং তিনি বিধায়ক হুমায়ুনের অনুগামী। হেমন্তের কথায়, ‘‘তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে।’’
অশান্তির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে খবর। উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে মুর্শিদাবাদে ব্লক সভাপতি এবং বিধায়কদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। বিধায়ক অনুগামীদের ‘বঞ্চিত’ করার অভিযোগ করার অভিযোগ ওঠে মুর্শিদাবাদ জেলা সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় এবং চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকারের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে দলের বিরুদ্ধেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন হরিহরপাড়ার নিয়ামত শেখ, জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক এবং নওদার বিধায়ক শাহিনা মমতাজ। শুরু হয় তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়া।
যদিও দলের নির্দেশে শেষমেশ মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হয় হুমায়ুনের ছেলে এবং শাহিনার মেয়েকে। ওই বিদ্রোহী বিধায়কদের সামাল দিতে মাঠে নামানো হয় মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং ফিরহাদ হাকিমকে। মলয়ের মধ্যস্থতায় অবশ্য রফা সূত্র বার হয়। তার পর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডোমকলের সভার আগে হুমায়ুনদের উদ্দেশে বার্তা দেয় দল। তাতে সুর কিছুটা নরম হয় হুমায়ুনের। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে নির্দল-কাঁটায় বিদ্ধ হচ্ছে শাসকদল।