পরম শুভাকাঙ্খীর মতো পাশে এসে বসেছিল বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি। ভাগ করে নিয়েছিল নিজের খাবার। জানিয়েছিল, তারও আত্মীয় ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে।
হাসপাতালের বিশ্রামাগারের দরজায় তালা। তাই সকলকেই শুতে হবে গাছের তলায়। গাছ তলায় হেলান দিয়ে তাই দু’জনের আলাপটা বেশ ভালই জমে উঠেছিল। কিন্তু আগুন্তুক মাঝবয়সী ওই ব্যক্তিই যে তাঁর সর্বনাশ করবে কে জানত! কৃষ্ণগঞ্জের কুঠিরপাড়া এলাকা থেকে আসা দুই যুবকের সঙ্গে কিন্তু সেটাই ঘটে গেল। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে এসে মানুষকে বিশ্বাস করে ঠকলেন বছর বাইশের দুই যুবক।
রবিবার দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন গোলক সর্দার। রাতে তাঁর শালা ও ছেলে হাসপাতালেই ছিলেন। রাত বাড়লে কোথাও কিছু না পেয়ে দু’জনে এসে বসেছিল হাসপাতাল চত্বরের গাছের নিচে সিমেন্টের বেদির উপরে। সেখানেই এসে গায়ে পড়ে আলাপ জমিয়েছিল মানুষটা। গোলক সর্দারের শালা নিত্যানন্দ সর্দার বলেন, “লোকটা এসে আলাপ জমাল। বলল তার ছেলে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আমরা বিশ্বাসও করলাম। গল্প করতে করতে তাকে বিস্কুটও খেতে দিলাম।” তিনি বলেন, “রাত ১১টা নাগাদ আমাদের জন্য চা নিয়ে এল। সরল মনে খেলাম। কিছু সময় পর থেকে আর কিছুই জানি না। হুঁশ ফিরতে দেখি আমাদের পকেট থেকে টাকা, মোবাইল নিয়ে চম্পট দিয়েছে লোকটা।’’
বিষয়টা চাউর হতেই হাসপাতাল চত্বরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ জানানো হয় ওয়ার্ড মাস্টারকে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কেন বন্ধ রাখা হয়েছে বিশ্রামাগার। সেটা বন্ধ আছে বলেই তো মানুষকে শীতের রাতেও খোলা আকাশের নিচে শুতে হচ্ছে। আর তাতেই রবিবার রাতে এমন
ঘটনা ঘটল। হাসপাতাল সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “আসলে যে সংস্থা এতদিন বিশ্রামাগার চালাচ্ছিল, তাদের মেয়াদ শেয হয়ে গিয়েছে। নতুন করে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে। সেই কারণেই বন্ধ রয়েছে।’’