খোদ জেলাশাসকের বাংলো লাগোয়া রাস্তায় বেহাল নিকাশি। অল্প বৃষ্টিতেই জল থইথই অবস্থা। নিজস্ব চিত্র
বুধবার দুপুর থেকে নাগাড়ে বৃষ্টি ঝরে চলেছে। বন্ধ হওয়ার নাম পর্যন্ত নেই। কখনও ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে, কখনও বৃষ্টি বেশি পড়ছে। আর অসময়ের এই বৃষ্টিপাতে একদিকে মানুষ যেমন দুর্ভোগ পোহালেন, অন্যদিকে তেমনই মাঠে থাকা ফসলে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিপাতের জেরে বহরমপুর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা জলকাদায় ভরে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার খুব প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাড়ি ছেড়ে বেরোননি। জেলার বাস ব্যবসায়ীরা জানান, ছোট গাড়ি বা টোটোতে করে বাইরে বেরোলে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সে কথা মাথায় রেখে বুধবার ও বৃহস্পতিবার যাঁরা ঘর ছেড়ে বেরিয়েছেন, তাঁরা বাসে করে যাতয়াত করার চেষ্টা করেছেন। এ দিন বিদ্যালয়গুলিতে পড়ুয়াদের উপস্থিতি কম ছিল। তবে যে সব বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা ছিল সে সব বিদ্যালয়ে বর্ষাতি গায়ে দিয়ে বা ছাতা মাথায় দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি পড়ুয়ারা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছেন।
শীতকালে এমন অসময়ের বৃষ্টিপাত দেখে অনেকে সমাজ মাধ্যমে নানা মন্তব্য করছেন। কেউ বলছেন, আজকে বর্ষাতি না শীতের পোশাক পরে বাইরে বেরোব ঠিক করতে পারছি না। কেউ কেউ আবার সমাজ মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন, এমনই বৃষ্টির দিনে কার কার বাড়িতে খিচুড়ি হচ্ছে। এভাবে অকালের বৃষ্টিকে নানা মন্তব্যে ভরে গিয়েছে সমাজ মাধ্যমের দেওয়াল।
আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার থেকে আকাশ পরিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার থেকে বৃহ্স্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত জেলায় ১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে। তবে তার পরিমাণ শুক্রবার জানা যাবে। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সময়ে বর্ষাকালের পাকা ধান এখনও মাঠে রয়েছে। কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১৫ শতাংশ পাকা ধান মাঠে রয়েছে। সেই সঙ্গে মাঠে সর্ষে, মসুর, জলদি জাতের আলু, গম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পালং, মুলো সহ শীতকালীন আনাজ মাঠ ভরে রয়েছে। কৃষকেরা জানাচ্ছেন, এই বৃষ্টি পাকা ধানে মই দিয়ে দিল। বৃষ্টির জেরে ধানের যেমন ক্ষতি হবে, তেমনই সর্ষে, আলু বা মসুর চাষে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। জলদি জাতের আলুতে ধসা লাগতে পারে। তবে মুর্শিদাবাদের উপ কৃষি অধিকর্তা মোহনলাল কুমার বলেন, ‘‘মাঠ থেকে ৮৫ শতাংশ ধান তুলে নেওয়া হয়েছে।’’