নাবালিকার বিয়েতে পণের জন্য মারধর করা হয়েছিল, আর তার জেরেই অপমানে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ।
এই মৃত্যু ঘিরেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে উঠল হরিহরপাড়া। অবরোধ করা হল রাজ্য সড়ক। তা তুলতে এলে ক্ষিপ্ত জনতার হামলায় ভাঙচুর হল পুলিশের গাড়ি। মার খেলেন কয়েক জন গ্রামীণ পুলিশও। তাড়া খেয়ে একটি বাড়িতে ঢুকে গা ঢাকা দিতে হল হরিহরপাড়া থানার অফিসারকে।
এ দিন সকালেই হরিহরপাড়ার প্রদীপডাঙা থেকে থেকে মিতা খাতুন (১৭) নামে ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বাড়ির লোকের অভিযোগ, এই মৃত্যুর পিছনে রয়েছে এক সহপাঠী ও তার পরিবার। অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ নিশ্চিন্তপুর মোড়ে রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন মৃতার পরিবার ও এলাকার মানুষ। পুলিশ গেলে বিক্ষোভকারীরা উল্টে তেড়ে আসে। কয়েক জনের সঙ্গে পুলিশের তর্কাতর্কি বাধে। এর মধ্যে আচমকা পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছোড়া শুরু হয়। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের একটি গাড়িতেও। ইটের ঘায়ে বেশ কয়েক জন গ্রামীণ পুলিশ জখম হন। রাস্তার ধারে একটি বাড়িতে লুকিয়ে পড়েন পুলিশকর্মীরা। পরে নওদা ও বহরমপুর থেকে বড় পুলিশ বাহিনী আসে। নামানো হয় কমব্যাট ফোর্স। পিছু হটে বিক্ষোভকারীরা।
পুলিশ তদন্তে জেনেছে, মিতা তার সহপাঠী বাহাদুর মোল্লার প্রেমে পড়েছিল। তারা বিয়েও করে ফেলে। কিন্তু দু’পক্ষই এই বিয়ে মানেনি। মেয়ের বাড়ির অভিযোগ, বাহাদুরের পরিবার পণ হিসেবে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে। তার জন্য মারধর করা হয় মিতাকে। অভিমানে মিতা প্রদীপডাঙা গ্রামে দাদুর বাড়িতে গিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। বাহাদুরের পরিবার অবশ্য তা অস্বীকার করেছে।
মৃতার পরিবারের অভিযোগ, বাহাদুরের এক আত্মীয় হরিহরপাড়ার সিভিক ভলান্টিয়ার হওয়াতেই পুলিশ পদক্ষেপ প্রথমে করেনি। হরিহরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের বিলাসচন্দ্র মণ্ডলের দাবি, ‘‘পুলিশ দোষীদের আড়াল করছে।’’ পুলিশ অবশ্য তা উড়িয়ে দিয়েছে।