এই স্কিনসর্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে সমাজ মাধ্যমে। ছবি:সুদেব দাস।
প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষায় পাশ করতে হলে অন্তত ৫০ পেতে হয়। কল্যাণী জেএনএমে অভীক দে-অনুগত সিন্ডিকেটের আশিসধন্য দুই পরীক্ষার্থী সেই ন্যূনতম নম্বর ছুঁতে পারেননি। কিন্তু পরে নম্বর বাড়িয়ে তাঁদের পাশ করিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
অভিযোগ আরও অনেক। যেমন, লিখিত পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার্থীর হোয়াটসঅ্যাপেই উত্তর পাঠাতেন এক ছাত্রনেতা। সম্প্রতি এমন কিছু হোয়াটসঅ্যাপের 'স্ক্রিনশট' সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে (আনন্দবাজার সেগুলির সত্যতা যাচাই করেনি)। একটি স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে, এক পড়ুয়া ছাত্রনেতা আলিম বিশ্বাসের কাছ উত্তর জানতে চাইছেন। আলিম হোয়াটসঅ্যাপে উত্তর পাঠাচ্ছেন। বেলা ১১টা থেকে পরীক্ষা শুরু, তার ছয় মিনিটের মধ্যে আলিম হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর পাঠিয়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ।
বর্তমান পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের অনেকেরই দাবি, কল্যাণী জেএনএমের সদ্য অপসারিত অধ্যক্ষের মদতেই দিনের পর দিন 'পাশ-ফেলের কারবার' চলত। তাঁদের মতে, সরাসরি কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশ না থাকলে পরীক্ষা শুরু হওয়ার ছয় মিনিটের মধ্যে পরীক্ষার্থীর হোয়াটসঅ্যাপে উত্তর পাঠিয়ে দেওয়া সম্ভব সম্ভব নয়। ‘থ্রেট সিন্ডিকেট’ চালানোর অভিযোগে বৃহস্পতিবার যাঁদের ছ’মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে, ইন্টার্ন আলিম বিশ্বাস তাঁদের অন্যতম। শেখ অখিল-সহ চার মূল পান্ডার অন্যতম বলে তাঁকে চিহ্নিত করেছে নবগঠিত অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি। প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে শুক্রবার একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। আর, অপসারিত অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
জেএনএম সূত্রের দাবি, স্নাতকোত্তরের (নাক-কান-গলা বিভাগে) চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্র্যাকটিক্যালে উত্তীর্ণ না হওয়া দুই পড়ুয়াকে পরে পাশ করানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষকের সই নকল করার অভিযোগও সামনে এসেছে। মোট ১০০ নম্বরের ওই এক্সটার্নাল পরীক্ষায় ৬০ ও ৪০ নম্বরে দুই ভাগে নেওয়া হয়। তাতে পাশ করতে গেলে পরীক্ষার্থীকে মোট ৫০ নম্বর পেতেই হয়। অন্য কলেজ থেকে আসা শিক্ষক-চিকিৎসকেরা এই পরীক্ষা নেন। কোন পরীক্ষার্থীকে কত নম্বর দেওয়া হয়েছে, তার প্রিন্ট-আউটে তাঁরাই সই করেন।
সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তেমন প্রিন্ট আউটের স্ক্রিনশটে (আনন্দবাজার তার সত্যতা যাচাই করেনি) দেখা যাচ্ছে, এক পরীক্ষার্থী ৩৩ এবং অপর এক পরীক্ষার্থী ৪০ নম্বর পেয়েছেন। পরে সেই নম্বর কলমের কালিতে কেটে ৫০ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি পরীক্ষকের সইও নকল করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনটা কী করে সম্ভব হল? জেএনএমের অপসারিত অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “নানা রকম মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। এমনটা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। পরীক্ষা শেষ হলেই বিভিন্ন বিভাগের প্রধানেরা স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টালে নম্বর আপলোড করে দেন। পরে সেই নম্বর আর অদলবদল করা সম্ভব নয়।"