কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজে। — ফাইল চিত্র।
মেডিক্যাল কলেজের মতো সর্বোচ্চ স্তরের হাসপাতাল হওয়া সত্ত্বেও অতি সাধারণ একাধিক পরিষেবা ও যন্ত্রপাতি এখনও কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজে (জেএনএম)পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ। ফলে জটিল সমস্যায় রোগীকে কলকাতায় রেফার করেই দায়িত্ব সারতে হয় চিকিৎসকদের।
কিছু দিন আগে গলায় ত্রিশূলবিদ্ধ এক যুবকের অস্ত্রোপচার না করে কলকাতার হাসপাতালে রেফার করে কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল জেএনএমকে। তার পর থেকে পরিকাঠামো কিছুটা শোধরানোর চেষ্টা করছেন কর্তৃপক্ষ। তারই জেরে সোমবার হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে এক বালিকার খাদ্যনালি থেকে কয়েন বের করে তার প্রাণরক্ষা করতে পেরেছেন চিকিৎসকেরা। ‘রিজিড ইসোফেগোস্কোপি’ নামে ওই অস্ত্রোপচার জেএনএমে এই প্রথম বার হল বলে চিকিৎসকেরা দাবি করেছেন।
রানাঘাট এলাকার বাসিন্দা বছর সাতের নাজিরা মণ্ডল কোনও ভাবে একটি পাঁচ টাকার কয়েন গিলে ফেলে। শনিবার তাকে হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে অজ্ঞান ও কোনওরকম কাটাছেঁড়া না করেই ‘রিজিড ইসোফেগোস্কোপি’ নামে বিশেষ প্রক্রিয়ায় খাদ্যনালী থেকে ওই কয়েন বের করা হয়। চিকিৎসক সৌমিত্র কুমার বলেন, ‘‘এ বার থেকে হাসপাতালে এই পরিষেবা শিশু ও বয়স্ক সকলেই পাবে।’’
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এই ধরনের অপারেশন যেখানে অন্য মেডিক্যাল কলেজে হামেশাই হচ্ছে সেখানে জেএনএমে শুরু হতে এত দেরি হল কেন? এই ধরনের কেসে যেখানে দ্রুত পদক্ষেপ করে রোগীকে বাঁচানো দরকার সেখানে এত দিন পরিকাঠামোর অভাবে জেএনএম থেকে সঙ্কটজনক রোগীকে রেফার হতে হত কলকাতায়। তাতে প্রাণসংশয়ের ঝুঁকিও থাকত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এতো দিন রিজিড ইসোফেগোস্কোপ যন্ত্র হাসপাতালে ছিল না। সম্প্রতি তা এসেছে। তাই এখন থেকে এই পরিষেবা পাওয়া যাবে।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, এখনও শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গেলে তা বের করার জন্য ‘ব্রঙ্কোস্কোপি’ জেএনএমে করা যায় না। কারণ ব্রঙ্কোস্কোপ যন্ত্র হাসপাতালে নেই। ১৩ থেকে ২০ বছরের ছেলেদের নাকের বিশেষ টিউমারের জন্য ‘এন্ড্রোস্কোপি এক্সিশন অফ অ্যাঞ্জিও ফাইব্রোমা’ নামে এক ধরনের অস্ত্রোপচার করতে হয়। তার জন্য ‘কোবলেশন’ নামে যন্ত্র দরকার। সেটিও জেএনএমে নেই। অস্ত্রোপচারের সময় অন্য হাসপাতালকে ভাড়া করতে হয়! একটি মেডিক্যাল কলেজে পরিকাঠামোর এই দশা কেন তার উত্তর কর্তৃপক্ষের থেকে স্পষ্ট ভাবে মেলেনি।
সুপার চঞ্চলকুমার দলাই শুধু বলেন, ‘‘যে পরিষেবাগুলো চালু নেই, সেগুলো দ্রুত চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’