নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন কৃষ্ণনগর উইমেন্সে

কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজের ইতিহাসের ওই শিক্ষিকার নাম বুলু মোদক। এক সময়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা প্রশ্ন তুলে রাস্তায় হেঁটেছিলেন তিনি। পা মিলিয়েছিলেন ছাত্রীদের সঙ্গে। আর এখন তিনিই সহকর্মীদের ছেড়ে একা অধ্যক্ষের ছায়াসঙ্গী।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৫১
Share:

কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজ

কলেজের তেইশ জন শিক্ষকের মধ্যে বাইশ জনই বয়কট করেছিলেন ছাত্র সংসদ আয়োজিত শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান। কিন্তু ওই এক জনই হাজির ছিলেন অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে।

Advertisement

কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজের ইতিহাসের ওই শিক্ষিকার নাম বুলু মোদক। এক সময়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা প্রশ্ন তুলে রাস্তায় হেঁটেছিলেন তিনি। পা মিলিয়েছিলেন ছাত্রীদের সঙ্গে। আর এখন তিনিই সহকর্মীদের ছেড়ে একা অধ্যক্ষের ছায়াসঙ্গী।

‘‘কী আর করবেন? ওঁর নিয়োগের বৈধতা নিয়েই তো প্রশ্ন উঠেছে। তাই অধ্যক্ষকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা চালাচ্ছেন’’— টিপ্পনী ওই কলেজেরই এক শিক্ষকের। যদিও প্রায় দশ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতা করছেন বুলু। সামনেই তাঁর বেতনবৃদ্ধির কথা রয়েছে। কলেজের অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক সুদর্শন বর্ধনের দাবি, বেতনবৃদ্ধি সংক্রান্ত কাগজপত্র তৈরি করতে গিয়েই তাঁদের চোখে পড়ে গন্ডগোল।

Advertisement

সুদর্শন জানান, ২০০৭ সালে কলেজ সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় আবেদন করার জন্য নেট এবং সেট ছাড়াও এমফিল ডিগ্রি থাকা আবশ্যক ছিল। কিন্তু দেখা যায়, বুলু এমফিল ডিগ্রি পেয়েছেন ইন্টারভিউয়ের বেশ কিছু দিন পরে। ২০০৭ সালের ২৫ এপ্রিল কলেজ সার্ভিস কমিশনে আবেদন করার শেষ সময় ছিল। সুদর্শনের দাবি, ‘‘সেই সময়ে তো নয়ই, ৫ সেপ্টেম্বর ইন্টারভিউ দেওয়ার সময়েও কলেজে পড়ানোর ন্যূনতম যোগ্যতা বুলু মোদকের ছিল না। কারণ তিনি এমফিল ডিগ্রি পেয়েছেন ২৯ সেপ্টেম্বর। ইন্টারভিউয়ের পরে। অর্থাৎ এমফিল ডিগ্রির মিথ্যা তথ্য দিয়েই তিনি চাকরি পেয়েছেন।

বিষয়টি সামনে আসার পরে কলেজে হইচই শুরু হয়ে যায়। কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি শুনানি কমিটি তৈরি করেন। তারা রিপোর্ট পাঠায় রাজ্যের শিক্ষা দফতরে। সেখান থেকে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত বা নির্দেশ আসেনি। কিন্তু শিক্ষকদের বড় অংশেরই দাবি, অনিয়মের বিষয়টি সামনে আসার পরেই অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠতে শুরু করেন বুলু।

ঘটনাচক্রে, অধ্যক্ষ ও টিএমসিপি ছাত্রনেত্রীদের সঙ্গে সাম্প্রতিক দ্বন্দ্ব ও ধর্না অবস্থানের সময়ে গণিত শিক্ষক সুদর্শনই ছিলেন শিক্ষকদের প্রধান মুখ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বুলুদেবীর নিয়োগ অবৈধ। এত বছর ধরে তিনি বেআইনি ভাবে চাকরি করছেন।” বুলু ইতিমধ্যে কয়েক জন সহ-শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ এনেছেন। তবে সুদর্শনদের দাবি, তাঁদের মুখ বন্ধ করতেই তিনি মিথ্যা অভিযোগ আনছেন।

কলেজের প্রশাসক জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত নিজেই। তিনি বলেন, “আমরা শিক্ষা দফতরের নির্দেশের অপেক্ষায় আছি।” বিষয়টি কত দূর এগোল জানতে চাওয়া হলে রবিবার তিনি বলেন, “এটা কলেজের সম্পুর্ণ অভ্যন্তরীণ বিষয়। আপনাকে কেন বলতে যাব?” আর বুলু বলেন, “অনেকে অনেক কথা বলতে পারেন। কিন্তু বিষয়টা বিচারাধীন, তাই এই নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement