বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
চতুর্থ বর্ষের ছাত্রদের সঙ্গে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের রাখা যাবে না, এমন দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখালেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রমণ ছাত্রাবাসের ছাত্রদের একাংশ। মঙ্গলবার তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার ১, ডিন পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টাডিজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিকিউরিটি অফিসারকে দীর্ঘ সময় আটক করে রেখে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন সিকিউরিটি অফিসার। তবে তাঁদের দাবি বিবেচনা করে দেখার প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর শান্ত হন বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনার পর প্রথম বর্ষের ছাত্রদের কোনও ছাত্রাবাসে রাখা হবে তা নিয়ে নতুন করে জটিলতা তৈরি হল বলে মনে করছেন অনেকেই।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগেই জগদীশ ছাত্রাবাসের টিএমসিপি-র সদস্যেরা প্রায় ৩৬ ঘণ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের আটকে রাখেন। শেষ পর্যন্ত তাঁদের কথা মতো প্রথম বর্ষের ছাত্রদের সঙ্গে চতুর্থ বর্ষের ছাত্রদের রাখার নোটিস জারির পর গভীর রাতে কর্তারা ঘেরাওমুক্ত হন। ঘেরাওয়ের জেরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হন উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জগদীশ ছাত্রাবাসের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের ছাত্রেরা দাবি করতে থাকেন যে, নবাগত ছাত্রদের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রদের সঙ্গে রাখতে হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সার্বিক পরিস্থিতি বিচার করে সিদ্ধান্ত নেন যে, তাঁদের রমণ ছাত্রাবাসে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রদের সঙ্গে রাখা হবে।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জগদীশ ছাত্রাবাসের টিএমসিপি-র সদস্যেরা একাধিকবার প্রবেশপথে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। বন্ধ হয়ে যায় পরীক্ষা। শেষ পর্যন্ত প্রথম বর্ষের ছাত্রদের সঙ্গে চতুর্থ বর্ষের ছাত্রদের এবং দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রদের সঙ্গে তৃতীয় বর্ষের ছাত্রদের সঙ্গে রাখার নোটিস জারি করা হয়। সূত্রের খবর, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের ছাত্রদের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘ দিনের। এই সিদ্ধান্ত আবার মেনে নিতে রাজি হননি রমণ ছাত্রাবাসের ছাত্রেরা। মঙ্গলবার তাঁদের একাংশ উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার না-থাকায় সহকারী রেজিস্ট্রার (১) তরুণ মজুমদার ও পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টাডিজ়ের ডিন শঙ্করকুমার আচার্যকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বেলা ১২টা থেকে প্রায় ৪টে পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখানো হয়।
বিক্ষোভকারী ছাত্রদের দাবি, ১৯ সেপ্টেম্বর অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠক না-হওয়া পর্যন্ত কোনও ভাবেই প্রথম বর্ষের ছাত্রদের কোনও ছাত্রাবাসেই রাখা যাবে না। রমণ ছাত্রাবাসের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রেরা স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, কোনও ভাবেই তাঁরা জগদীশ ছাত্রাবাসের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রদের সঙ্গে এক ছাত্রাবাসে থাকবেন না। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হল বলে মনে করছেন শিক্ষকদের অনেকেই। ফের অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় পঠনপাঠন বন্ধের সম্ভবনা দেখছেন কর্তারা।
উপাচার্য গৌতম সাহা বলেন, ‘‘আমি অত্যন্ত অসুস্থ। সুস্থ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পর দুই পক্ষের সঙ্গে আবার কথা বলব।’’