রেলের উচ্ছেদের প্রতিবাদে একজোট শ্রমিক সংগঠন। বুধবার ফুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
হকার উচ্ছেদের নোটিস দিয়েছিল রেল। প্রতিবাদে এক মঞ্চে চলে এল আইএনটিটিইউসি, এআইটিইউসি এবং সিটু। রেলের জমিতে ব্যবসা করেন যাঁরা তাদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
রানাঘাট-শান্তিপুর শাখার ফুলিয়া স্টেশনে দিন কয়েক আগেই হকারদের উচ্ছেদের নোটিস দেয় রেল। সেই সময়সীমা পার হওয়ার পর বুধবার সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন ব্যবসায়ীরা। এ দিন স্টেশন লাগোয়া এলাকায় মঞ্চ বেঁধে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রথমে ব্যবসায়ী সংগঠন ও আইএনটিটিইউসি নেতারা ছিলেন। পরে বড় মিছিল করে আসে যথাক্রমে সিপিএম এবং সিপিআই প্রভাবিত সংগঠন সিটু এবং এআইটিইউসি-র সদস্যেরা। মিছিল স্টেশন চত্বর ঘুরে আসার পরে মঞ্চ থেকে আহ্বান জানানো হয় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের স্বার্থে দলমত নির্বিশেষে একযোগে আন্দোলনে শামিল হতে। সেখানে সবারই ব্যানার থাকবে বলে জানানো হয়। পরে সেখানে যান বাম নেতারাও। একই সঙ্গে উড়তে দেখা যায় তৃণমূল এবং বাম সংগঠনের পতাকা।
সব সংগঠনের তরফেই জানানো হয়েছে, হকার উচ্ছেদের বিরুদ্ধে এবং পুনর্বাসনের জন্য তাদের লড়াই। ওই মঞ্চ থেকেই আগামী ২৮ ও ২৯ মার্চ ধর্মঘটে সমর্থনের আবেদনও জানান বাম নেতারা। সিটুর জেলা কমিটির সদস্য অনুপ ঘোষ বলেন, “তৃণমূল এখানে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সব শ্রমিক সংগঠনের চাপে আমাদের সেই মঞ্চ ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। আমরাও বুঝিয়েছি, এটা কোনও রাজনৈতিক মঞ্চ নয়। হকারদের স্বার্থে আমাদের লড়াই।” আইএনটিটিইউসির জেলা নেতা সনৎ চক্রবর্তী বলছেন, “ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াতেই আমাদের আন্দোলন। সেখানে যদি দলমত নির্বিশেষে সবাই আসে সেটা তো ভালই। আমরা রাজনৈতিক ফায়দার কথা ভাবিনি।”
এ দিন ‘রেল হকার উচ্ছেদ বিরোধী প্রতিবাদী মঞ্চ’ নামে একটি মঞ্চের নামও স্থির হয়। তাদের তরফে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
তবে এ দিন শেষ পর্যন্ত কোনও উচ্ছেদ অভিযান হয়নি। রেলের দাবি, জবরদখলকারীদের উচ্ছেদের জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। তা পালন করা না হলে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “আদালতের নির্দেশ মেনেই উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি যাতে না হয় সে দিকে নজর রেখে কাজ করা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশ ও রেল পুলিশের সঙ্গে কথা বলেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।”