প্রতীকী চিত্র।
করোনা আবহে বিদ্যালয় বন্ধ। ফলে পড়ুয়াদের সঙ্গে বিদ্যালয়ের যোগাযোগ নেই বললেই চলে। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রীদের কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় আনতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে স্কুলগুলি। কন্যাশ্রীর প্রকল্পে পুরনোদের রিনিউয়াল করার ক্ষেত্রে সমস্যা না হলেও নতুনদের এই প্রকল্পের আওতায় আনতে গিয়ে বিপাকে পড়ছে। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি, পুরনোদের তথ্য বিদ্যালয়ে রয়েছে। ফলে তাদের রিনিউয়াল করতে অসুবিধা নেই। কিন্তু যারা এ বারে এই প্রকল্পের আওতায় প্রথম আসছে, তাদের আবেদনপত্র লাগবে। বিদ্যালয় ছুটি থাকাকালীন সময়ে তাদের পরিবারে খবর পাঠিয়ে আবেদনপত্র আনাতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে। ফলে প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে অনেক ছাত্রীকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় আনা গেল না।
যদিও মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘ছাত্রীদের দ্রুত এই প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য একটি সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো অধিকাংশ ছাত্রীকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা গিয়েছে। যারা বাকি আছে তাঁদেরও দ্রুত আনা হবে।’’
বিভিন্ন স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, অনলাইনে ফর্ম ভরার মতো পরিস্থিতিই নেই অনেক ছাত্রীর পরিবারে। বহু পরিবারেই স্মার্টফোন পর্যন্ত নেই। তার ফলে বহু পরিবারই এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। অথচ মুর্শিদাবাদে বরাবরই ছাত্রীরা পরীক্ষায় ভাল ফল করে। সেই পথে যেন কাঁটা না পড়ে।
জেলাপ্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, এ বছর আড়াই লক্ষ ছাত্রীকে কে-১ প্রকল্পের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় দু’লক্ষ ৩০ হাজার জনকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। তেমনই কে-২ প্রকল্পের ৫০ হাজার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেখানে প্রায় ৪৮ হাজার এই প্রকল্পের মধ্যে এসেছে। বাকিদের দ্রুত এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। সূত্রের খবর কে-১ প্রকল্পে প্রায় আড়াই লক্ষের মধ্যে প্রায় ৫৮ হাজার নতুন। যারা প্রকল্পের আওতায় আসতে বাকি রয়েছে, তাদের সিংহভাগ নতুন। আর নতুনদের প্রকল্পের আওতায় আনতে সমস্যা হচ্ছে। গত বছরও কন্যাশ্রী প্রকল্পে তিন লক্ষ ছাত্রীকে আনা হয়েছিল।
জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, গত ২৫ সেপ্টেম্বর জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) স্কুলগুলিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কন্যাশ্রীর ফর্ম অভিভাবকদের বিলি করতে হবে। ৭ অক্টোবরের মধ্যে ফর্ম ফেরত নিতে হবে এবং ১০ অক্টোবরের মধ্যে সেই ফর্ম অনলাইনে আপলোড করতে হবে। কিন্ত ১০ অক্টোবরের মধ্যে সবাইকে প্রকল্পের আওতায় আনা যায়নি। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অমরকুমার শীল বলেন, ‘‘ছাত্রীদের দ্রুত এই প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কত জন ছাত্রী এই প্রকল্পের আওতায় এসেছে সেই হিসেব জেলা প্রশাসনের কাছে আছে।’
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, কন্যাশ্রী প্রকল্পের কে-১এর আওতায় আসার শর্ত হল অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করা ও ১৪ বছর বয়স হতে হবে। এ ছাড়া কে-২প্রকল্পের আওতায় আসার জন্য ১৮বছর বয়স হতে হবে। বহরমপুরের হিকমপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা পুরনোদের একশো শতাংশ রিনিউয়াল করতে পেরেছি। ৯৫ শতাংশ নতুনদের এই প্রকল্পের আওতায় আনতে পেরেছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই বললেই চলে। ফলে তাদের ফোন করে, বাড়ি বাড়ি লোক পাঠিয়ে অভিভাবকদের ডেকে পাঠিয়ে ফর্ম জমা নেওয়া হয়েছে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যায়নি।’’