Pradhan Mantri Awas Yojana

আবাস যোজনার কাজ দেখতে এসেছে কেন্দ্রীয় দল, ভাষার ফারাকে কথা চালানোই দায় গ্রামবাসীর

মদনপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে আলাইপুরের মাঠপাড়ার নারায়ণ সরকারের নাম ঘর পাওয়ার তালিকায় রয়েছে। কেন্দ্রীয় দলের সদস্য জানতে চাইলেন, “কাস্ট কেয়া হ্যায়, কাস্ট?” উত্তর আসে, “এই মাঠের কাজ করি।”

Advertisement

অমিত মণ্ডল

কল্যাণী শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:০১
Share:

আবাস পর্যবেক্ষণে কেন্দ্রীয় দল। কল্যাণীতে। নিজস্ব চিত্র

আবাস যোজনার কাজ সরেজমিন দেখতে দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় দল এসেছেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে উপভোক্তাদের কথাবার্তায় প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাষা। অধিকাংশ উপভোক্তা ও তাঁদের পরিবার হিন্দি ভাল বুঝতে পারছেন না। আবার উপভোক্তাদের বাংলা নিয়ে প্রতিনিধি দলের দুই সদস্যের অবস্থাও তথৈবচ। মাধ্যম হতে হচ্ছে স্থানীয় ও জেলা স্তরের প্রশাসনিক কর্তাদের।

Advertisement

বৃহস্পতিবার কল্যাণী ব্লকের মদনপুর ২ ও সরাটি পঞ্চায়েতে ৪০ জনের বাড়িতে যান। এদের কারও নাম তালিকায় আছে, কারও সমীক্ষার পরে বাদ গিয়েছে। কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা জানতে চান, জমি কার নামে আছে, কত দিন ধরে বসবাস করছেন ইত্যাদি। স্থানীয় ও জেলা স্তরের প্রশাসনিক আধিকারিক মাধ্যমে কথাবার্তা চলছে।

মদনপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে আলাইপুরের মাঠপাড়ার নারায়ণ সরকারের নাম ঘর পাওয়ার তালিকায় রয়েছে। কেন্দ্রীয় দলের এক সদস্য জানতে চাইলেন, “কাস্ট কেয়া হ্যায়, কাস্ট?” উত্তর আসে, “এই মাঠের কাজ করি।” স্থানীয় অধিকারিকদের এক জন ধরিয়ে দেন, “কাস্ট মানে তোমার কাজ নয়।” এরপর কেন্দ্রীয় দলের সদস্যের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা চলতে থাকে অতিরিক্ত জেলাশাসক (‌জেলা পরিষদ) কৃষ্ণাভ ঘোষ ও কল্যাণী ব্লকের বিডিও দ্বীপ চট্টোপাধ্যায়ের মাধ্যমে।

Advertisement

ওই পঞ্চায়েতেই চক তারিণীপুরের আর এক উপভোক্তার বাড়িতে গিয়ে কেন্দ্রীয় দলের সদস্য জিজ্ঞাসা করেন, “জমিন আপনা হ্যায়?” উপভোক্তার পরিবারের ওই মহিলা সদস্য ঘাড় নাড়েন। পাশে থাকা এক আধিকারিক বাংলায় লেখা জমির কাগজপত্র কেন্দ্রীয় দলের সদস্যকে দেখিয়ে দেন। অবশ্য কেন্দ্রীয় দলের অন্য সদস্যকে হিন্দিতেই তথ্য লিখতে দেখা যায়। ফলে উপভোক্তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা কেন্দ্রীয় দলের পক্ষে কতটা জানা সম্ভব হচ্ছে, সেই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা খুঁটিয়ে কাগজপত্র দেখেন। সেখানে কারও নাম, কারও বাবার নাম ভুল রয়েছে। কোথাও আবার উপভোক্তার ছেলের এসি লাগানো পাকাবাড়ি ঘেঁষেই উপভোক্তার টালির চাল দেওয়া ঘর রয়েছে। তাঁর ছেলে একটি সংস্থায় কাজ করেন। তাঁর নাম অবশ্য পরে সমীক্ষার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। উপভোক্তা বাড়িতে না থাকায় তাঁর স্ত্রীর কাছে বিভিন্ন বিষয় জানতে চান প্রতিনিধিরা। যেমন ছেলে কী করেন, কোন ঘরে থাকেন? টালির চাল দেওয়া ঘরের ভিতর ঢুকেও দেখেন। স্থানীয় এক আধিকারিক বলছেন, “আসলে ওঁরা পাকা ঘরেই থাকেন। এখন বলছেন ওই টালির চাল দেওয়া ঘরে থাকেন।” উপভোক্তার স্ত্রী অবশ্য দাবি করেন, “ছেলে দেখে না। আমরা ওই ঘরেই থাকি।”

প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা এ দিন ব্লক অফিস ওই এলাকার নামের তালিকা নিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের এ দিন শিমুরালিতে যাওয়ার কথা থাকলেও দেরি হওয়ায় আর যাননি।

(সহ প্রতিবেদন: সৌমিত্র সিকদার)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement