কৃষ্ণনগরের একটি প্রতিমা। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
নামেই সরস্বতী পুজো।
সেই উপলক্ষে কোথাও টিএমসিপি রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার করল, আবার কোথাও বা এবিভিপি সারল জনসংযোগ। বেশির ভাগ জায়গায় টিএমসিপি কলেজের পুজোতেই এবং এবিভিপি এলাকায় পুজোর আয়োজন করেছে। সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে প্রচারের সুযোগ হাতছাড়া করেনি দুই ছাত্র সংগঠনই।
দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় কোনও কলেজে ছাত্র সংসদের এখন অস্তিত্ব নেই। তবে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের ইউনিট রয়েছে। এর আগে মাজদিয়ার সুধীরঞ্জন লাহিড়ী মহাবিদ্যালয়ের মত কলেজে টিএমসিপি এবং এবিভিপির লড়াই সামনে এসেছে। পড়ুয়াদের মধ্যে নিজেদের প্রভাব তৈরির চেষ্টায় আগাগোড়া সচেষ্ট ছিল দুই তরফই। সেই টানাপড়েনের মধ্যেই এসে পড়ে করোনা এবং লকডাউন। সেই ইস্তক কলেজ খোলেনি এখনও। ফলে পড়ুয়াদের সঙ্গে সরাসরি কলেজ যোগাযোগের রাস্তা আপাতত নেই ছাত্র সংগঠনগুলির। তাই পড়ুয়াদের কাছে পৌছাতে বাগদেবীর আরাধনার দিনটিকে বেছে নেওয়া।
মঙ্গলবার নদিয়ার বিভিন্ন কলেজে সরস্বতী পুজো হয়েছে। কোথাও কলেজ কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হয়েছেন, কোথাও বা ছাত্র সংগঠনের ইউনিট পুজো করেছে। মাজদিয়ার সুধীরঞ্জন লাহিড়ী মহাবিদ্যালয়ে কলেজে পুজো হয়েছে এবিভিপি-র উদ্যোগে। তাদের ইউনিট প্রমুখ প্রমীলা সিকদার বলেন, “আমরা এই বছরই প্রথম কলেজে সরস্বতী পুজোর ব্যবস্থা করেছি। কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে।” পাশাপাশি, এবিভিপি-র বিভিন্ন ইউনিটে পুজোর আয়োজন হয়েছে। তা নিয়ে কোনও প্রচার না থাকলেও পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের সঙ্গে জনসংযোগ সেরেছেন আরএসএস অনুগামী ছাত্র সংগঠনের সদস্যেরা।
টিএমসিপির বিভিন্ন ইউনিটও কলেজে-কলেজে সরস্বতী পুজোয় উদ্যোগী হয়েছে। কোথাও বা কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে সহায়তা করেছে। কলেজের বাইরেও বিভিন্ন এলাকায় সংগঠনের তরফে পুজোর ব্যবস্থা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন কলেজে টিএমসিপি-র তরফে ফ্লেক্স, ব্যানার টাঙানো হয়েছে। সেখানে কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মত রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পের প্রচার রয়েছে। করিমপুর থেকে হরিণঘাটা— জেলার নানা প্রান্তের কলেজের পুজোতেই এ বার এ ভাবে হাজির থেকেছে তারা।
টিএমসিপির রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রাকেশ পাড়ুই, কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সম্রাট পালেরা বলছেন, “জেলার কলেজগুলিতে টিএমসিপি ছাড়া অন্য ছাত্র সংগঠন খুঁজে পাওয়া যায় না। এ দিন আমাদের ইউনিটের তরফে যেমন পুজো হয়েছে, তেমনই কলেজের পুজোতেও সহযোগিতা করেছি আমরা। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কাজের প্রচার রয়েছে।”
এবিভিপির প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রমুখ আশিস বিশ্বাস আবার দাবি করেন, “পড়ুয়াদের জন্য শিক্ষার আদর্শ পরিবেশ তৈরির লড়াই আমাদের। পড়ুয়ারা টিএমসিপির সন্ত্রাসের হাত থেকে বাঁচতে চাইছে। আগামী দিনে পড়ুয়ারাই বুঝিয়ে দেবে তারা এবিভিপি-র সঙ্গে আছে।”