প্রতীকী ছবি।
কখনও পড়ুয়া, কখনও শিক্ষক— চাইলেই হাতে এসে যাচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র। বিপত্তিও ঘটছে।
কিন্তু কল্যাণী থানা বা জেলা পুলিশ সেই অস্ত্র খুঁজে পাচ্ছে না কিছুতেই। কখনও স্কুলবাড়ির উঠোনে বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছে, কখনও দুষ্কৃতীদের এলাকা দখলে ছুটছে গুলি। ঘটনার পরে পুলিশের তৎপরতা বাড়ছে। দিন কয়েক যেতে না যেতে ফের যে কে সেই।
শনিবার সন্ধ্যায় মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন মধ্য চল্লিশের এক পার্শ্বশিক্ষক, অর্ণব রায়। যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি, তা দেশি হলেও পুলিশের ভাষায় ‘সফিস্টিকেটেড’। এলাকায় ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত অর্ণবের হাতে কী ভাবে সেই অস্ত্র এল, তা এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
এর আগে কল্যাণী, গয়েশপুর সগুনা এবং হরিণঘাটা এলাকায় যে সব অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, সেগুলি সবই ওয়ান শটার। মাস কয়েক আগে হরিণঘাটায় অস্ত্র কারখানার হদিস মিলেছিল। বনগাঁ থেকে পাচারের সময় হরিণঘাটার জাগুলিতে ধরা পড়েছিল দুই অস্ত্র কারবারী। ওয়ান শটারের কারখানা যে এলাকায় বা আশপাশে রয়েছে, তা জানাও গিয়েছে। কিন্তু উন্নত রিভলভার আসছে কোথা থেকে তা নিয়ে পুলিশ এখনও অন্ধকারে।
বছর দেড়েক আগে সিআইডি এসে সগুনা থেকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র, অজস্র গুলি ও শ’খানেক বোমা উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পাকড়াও করা হয় শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত প্রশান্ত বিশ্বাসকে। বছর ঘুরতে না ঘুরতে ওই এলাকাতেই ফের অস্ত্র-বোমার রমরমা কারবার চালু করে প্রশান্তের সঙ্গীরা। সে বারেও কিছু টের পায়নি পুলিশ। ফের সিআইডি এসে জনা চারেক দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করে। উদ্ধার হয় বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র। সেগুলি বিহার থেকে আমদানি করা হয়েছে বলে সিআইডি জানতে পারে। তার পরেও হুঁশ ফেরেনি পুলিশের।
বছর খানেক আগে গয়েশপুরের এক স্কুল ছাত্র রাতে সগুনায় গুলিবিদ্ধ হয়। সে পুলিশকে জানিয়েছিল, একটি ঝোপে সেই অস্ত্র কুড়িয়ে পেয়েছে। তবে তার দাবি ঠিক কিনা তাও পুলিশ জানতে পারেনি। কিন্তু প্রশ্নটা তখনই উঠেছিল, চাইলেই কি যে কেউ অস্ত্র পেতে পারে?
এমন ঘটনায় বিব্রত শাসক দলের নেতারা। দলেরই কিছু নেতা বলছেন, বার বার সিআইডি হানার পরে স্থানীয় পুলিশের উচিত ছিল, এলাকায় নজরদারি আরও জোরদার করা। কিন্তু, তারা তা করেনি। নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়ার সেই একই বক্তব্য, ‘‘পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’