গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
রাত ১২টার পরে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীটিকে এক বার ফোন করেছিল তাঁর ‘প্রেমিক’। ফোন বেজে যায়। তার আগে দীর্ঘক্ষণ যুবকটি অন্য এক ‘বান্ধবী’র সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তদন্তে এমনটাই জেনেছে পুলিশ।
ওই ছাত্রী ঠিক কখন অগ্নিদগ্ধ হন, ময়না তদন্তের রিপোর্টে তার উল্লেখ নেই। যে গলিতে তাঁর দগ্ধ মৃতদেহ মেলে, সিসিটিভি ফুটেজে রাত ১০টা ৪০ নাগাদ সে দিকে তাঁকে হেঁটে যেতে দেখা যায়। একটি মোটরবাইকে এক জোড়া তরুণ-তরুণী তাঁর পিছু নেন। খানিক পরে সেটি ফিরলেও ছাত্রীটিকে আর ফিরতে দেখা যায়নি। ওই তরুণ-তরুণীর পরিচয় সোমবার রাত পর্যন্ত পুলিশ জানাতে পারেনি। নদিয়ার জেলাশাসকের অফিসের কাছে থাকা ওই সিসি ক্যামেরার ফুটেজে বাইকের নম্বর প্লেট পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর সকালে কৃষ্ণনগরে জেলা স্টেডিয়াম লাগোয়া গলিতে ছাত্রীর দেহ মেলে। আঙুলের ছাপ বিশেষজ্ঞেরা পরের দিন ঘটনাস্থল থেকে কেরোসিনের বোতল উদ্ধার করেন। তা ফরেন্সিক দলকে দেওয়া হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে মৃতার হাতের দশ আঙুলের ছাপ সংগ্রহের উল্লেখ আছে। ধৃত ‘প্রেমিক’-এর আঙুলের ছাপ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ সূত্রের দাবি, আত্মহত্যা না খুন, আঙুলের ছাপ সেই ইঙ্গিত দিতে পারে। দু’জনের কারও আঙুলের ছাপ বোতলে পাওয়া ছাপের সঙ্গে না মিললে বুঝতে হবে, আরও কেউ যুক্ত।
এ দিন সিপিএমের ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠনের প্রতিনিধিরা মৃতার বাড়িতে যান। কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড়ে সভা করে বিচার চেয়ে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপারের দফতরে দাবিপত্র দেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, কলতান দাশগুপ্তেরা। পুলিশ সুপার অমরনাথ কে-র দাবি, তদন্তে কোনও ফাঁক রাখছেন না। এ দিন দুই রসায়নবিদ ঘণ্টাখানেক ধরে ঘটনাস্থল খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ছাত্রীটির ‘প্রেমিক’ ঘটনার রাতে ১০টা থেকে সওয়া ১১টা বাড়ির বাইরে ছিল। সেই দিন দুপুরে সে অন্য ‘বান্ধবী’র সঙ্গে সিনেমা দেখতে যাওয়ায় ছাত্রীটি ফোনে কান্নাকাটি করেন। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ছাত্রীটির হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাসে ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমি নিজেই দায়ী’ ইত্যাদি কথা দেখে যুবককে জানান সেই বান্ধবী। সে ওই বান্ধবীকে ফোন করে প্রায় ৪০ মিনিট কথা বলে। ১২টা ২ মিনিটে ফোন করে ওই ছাত্রীকে। তিনি ধরেননি। পরদিন দেহের কাছে ব্যাগে ফোনটি মেলে।