সেই লিফলেট। —নিজস্ব চিত্র।
মাস খানেক আগে দুষ্কৃতীদের খপ্পরে পড়েছিলেন কান্দির মুনিগ্রামের বাসিন্দা সহিরুল শেখ। কান্দির এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে তিন লক্ষ টাকা তুলে বাড়ির দিকে রওনা হন। হঠাৎ কে বা কারা তাঁর জামার পিছনে নোংরা ঢেলে দেয়। তিনি পিছন ঘুরে তা দেখতে গেলে সেই সুযোগে ওই টাকা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
একই ভাবে গত সেপ্টেম্বরে কান্দির এক ব্যাঙ্ক থেকে দু’লক্ষ টাকা তুলে বাড়ি ফিরছিলেন গুণানন্দবাটির বাসিন্দা ধনপতি ঘোষ। শহর ছেড়ে ফাঁকা রাস্তায় এসে পড়তেই দু’টি মোটরবাইকে তাঁর পথ আটকায়। কোনও কিছু বোঝার আগেই টাকা ভর্তি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। তারপর মোটরবাইকে চেপে ধাঁ।
শুধু সহিরুল বা ধনপতি নন, দুষ্কৃতীদের খপ্পরে পড়ে টাকা খুইয়েছেন অন্তত জনা পনেরো জন। থানায় অভিযোগ জমা হয়েছে। কিন্তু নিস্তার মিলছে কই।
তাই শেষে মাঠে নামতে হল পুলিশকে। শহরের বাসিন্দাদের সচেতন করতে লিফলেট ছড়িয়ে প্রচার চালাল কান্দি থানার পুলিশ। লিফলেটে গ্রাহকদের অজানা ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকেত বলা হয়েছে। আর আশেপাশে কাউকে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখলে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে দেওয়া হয়েছে তিনটি ফোন নম্বর। বিপদ বুঝলে সেই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
শহরে একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক রয়েছে। পুলিশের দাবি, সেই ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার পরে সাহায্যের নামে প্রতারণা করে চলেছে একদল দুষ্কৃতী। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, একটি দল ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত। তাই ওই ধরনের পদক্ষেপ করে যদি একজন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা যায় তা হলে গোটা দলটাকেই ধরা পড়বে। শুধু লিফলেট নয়, শহর জুড়ে ব্যাঙ্কে, পোস্ট অফিসে পোস্টার সেঁটেও সচেতনার প্রচারে নেমেছে পুলিশ।
মহকুমা শহর হওয়ার কান্দিতে সারাক্ষণ ভিড় লেগে রয়েছে। একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও একটি পোস্ট অফিস রয়েছে। শহরের বাসিন্দারা ছাড়াও গ্রামঞ্চল থেকে বহু মানুষ ব্যাঙ্কে টাকা লেনদেন করতে হাজির হন। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। গ্রাহকদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলা ও জমা দেওয়ার নানা সহযোগিতার আছিলায় কিছু দুষ্কৃতী ওই গ্রাহকদের পিছু নিচ্ছে। আর সুযোগ পেলে টাকা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে চম্পট দিচ্ছে।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “দুষ্কৃতীদের ধরতে সাদা পোশাকেও পুলিশ নজর রাখছে।” কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের সুকান্ত ত্রিবেদী বলেন, “আগের ঘটনাগুলোর কিনারা এখনও হয়নি। তবে পুলিশ এ ভাবে গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনা বৃদ্ধি করলে এ ধরনের ঘটনা খানিক কমবে বলে মনে হয়।”