দাদা না বড়দা, দিন গুনে যাচ্ছে নওদা

দলের এই আকচাআকচি জেলা পযবের্ক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর কানে গিয়েছে।

Advertisement

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

নওদা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৯ ০০:২৫
Share:

রাত পোহালেই ভোট: শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

গরমে গলগল করে ঘামছে নওদার কালীতলা মোড়। ইতিউতি ছায়ায় পদ্ম, কাস্তে, হাত, জোড়াফুলের অজস্র পতাকা পতপত করে উড়ছে। শনিবারের প্রান্তিক বিকেল। আইসক্রিমের গাড়ি আর থিকথিক করছে টোটোর ভিড়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জিপ তার মধ্যে ধুলো উড়িয়ে এলাকায় পাক খাচ্ছে।

Advertisement

শনিবার অধীর চৌধুরীর সভায় পা বাড়ানো দোকানিদের কানে চাপা শাসানি, ‘‘ও দিকে যেও না চাচা!’’ ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া মানুষটা থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে। তার পরে, জনা বিশেকের কংগ্রেসের মিছিলে টুক করে হারিয়ে গিয়ে অধীরের সভায় হারিয়ে যায়। সংক্ষেপে শেষ প্রচারের আগে, এটাই নওদার ভোট-ব্যস্ততা।

একই সঙ্গে, অধীর ঠেকানোর অস্ত্র আর দলীয় বিরোধ মোছার চেষ্টা।

Advertisement

বাজারের এক কোণে তৃণমূলের অফিসে কান পাতলেই তা স্পষ্ট হচ্ছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে কমবয়সী এক দল কর্মী। তাঁদের অনেকেই আবু তাহের খান না মোসারফ হোসেনের ‘মধুর’ সম্পর্ক নিয়ে দোটানায়। বলছেন, ‘‘শা...এতো ভারী খিচান হল, আবু’দার সঙ্গে হাঁটলে মধুদার গোসা। আর মধুদার সঙ্গে কতা বললে, আবুদার ছেলেপুলেরা বাঁকা চোকে তাকাচ্ছে!’’

মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে তিনি প্রার্থী হওয়ার ফলেই নওদায় ফের নির্বাচন। নওদার টিকিট তাঁর বিরোধী গোষ্ঠী পেয়েছে বলেই এ বার প্রচারেও তেমন ভাবে তাঁকে দেখা যায়নি বলে দলের অন্দরের খবর। অধীর কটাক্ষ করছেন, ‘‘নওদার এমএলএ, দিদির কথায় ভেবেছিল এমপি হয়ে রাজা হবে। সেটা গেল, এ বার নওদাও যাবে। আমও গেল, ছালাও গেল!’’

তৃণমূলের নওদার নেতৃত্ব আবার গুমরে মরছেন— সাহিনা মমতাজের কোন রাজনৈতিক দক্ষতা নেই। মোসারফ হোসেন যেহেতু নওদা ব্লক কংগ্রেস সভাপতি ফলে তাঁর উপর তাঁকে ভরসা করতেই হচ্ছে।

দলের এই আকচাআকচি জেলা পযবের্ক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর কানে গিয়েছে। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘তৃণমূল পরিচয় দিয়ে যদি কোনও নেতা-কর্মী অন্য কোথাও ভোট দিতে বলেন, তবে আমাকে জানাবেন। প্রয়োজনে হোয়াটসঅ্যাপ করবেন।’’

লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে চলে আসা সেই বিবাদ বৈশাখী রোদ্দুরে বিধানসভার উপ নির্বাচনের দোরগোড়ায় আরও পেকেছে। তৃণমূল কর্মীরা এখন দোটানায়— আবু তাহের, মোশারফ না ‘বড়দা’ (শুভেন্দু) কার কথা শুনবেন তাঁরা!

তা হলে নওদা কি ফের কংগ্রেসের হাত ধরবে? প্রার্থী সুনীল মণ্ডল বলছেন, ‘‘না ধরার তো কোনও কারণ নেই। দাদার (অধীর চৌধুরী) দেখানো পথে এত দিন এখানে যিনি জিতেছেন, এ বার তিনি দল বদলেছেন। মানুষ তো দল বদলায়নি।’’

তা হলে নওদা কোন দাদার?

একটা বিস্ময়কর সোমবারের দিকে তাকিয়ে আছে নওদা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement